যেখানেই হামলা সেখানেই প্রতিবাদ, নন্দীগ্রাম থেকে কর্মীদের বার্তা কুণালের

0
1

আরও শক্তিশালী হয়ে ২০২৬-এ ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল কংগ্রেসই। তাই কোনও প্ররোচনায় পা নয়, মজবুত করুন সংগঠনকে। নন্দীগ্রাম থানার সামনে এক ডেপুটেশন মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। একই সঙ্গে তিনি একহাত নেন বিরোধী বিজেপি ও সিপিএমকেও। কড়া বার্তা দেন পুলিশ নিয়েও।কুণাল এদিন বলেন, এখন বাংলাতে যাঁরা মারছেন, তাদেরকে যারা প্রোটেকশন দিচ্ছেন তাঁদেরকে বলছি, ব্যাগ গুছিয়ে রাখুন। পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে অনেকে রয়েছেন যারা সিপিএমের আমল থেকে ছিলেন। কমরেডরা এখন অনেকে রামদেব হয়েছেন। অনেকে আছেন মনে-প্রাণে সিপিএম। অন্তর্ঘাত করছেন এরা। তার স্পষ্ট কথা, এই প্রতিকূলতা সংগঠন দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। আপনারা সংগঠনে জোর দিন, সংগঠন নিয়ে লড়ে যান।

কুণালের আরও সংযোজন, আমি মার খাচ্ছি এক জায়গায়, আর প্রতিবাদ করতে আসছি আরেক জায়গায়, সেটা যথাযথ নয়। যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেই ভেকুটিয়ায় মিটিং ডাকুন, আমরা ভেকুটিয়ায় যাব।সেখানে মিটিং করে জবাব দেব। তিনি বলেন, লোকসভা নির্বাচনে আমরা ১৫টা বিধানসভা কেন্দ্রে হেরেছি। তাই আগে আমাদের ঘর সামলাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মানুষের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে আমরা হেরেছি। যেখানে হেরেছি, সেখানে সংগঠন মজবুত করতে হবে। নবীনকে নিয়ে চলতে হবে, প্রবীণ যাঁরা বসে রয়েছেন, তাঁদের পুরোদস্তুর কাজে নামাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত সুবিধে দিচ্ছেন, তাহলেও মানুষ কেন অন্য জায়গায় ভোট দেবেন? সকলকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাতে হবে। এত সুবিধা পেয়েও মানুষ কেন তৃণমূলকে ভোট দেবেন না। সিপিএম এখন বিজেপির সঙ্গে শহিদ বেদিতে মালা দিতে যাচ্ছে। মনে রাখবেন, ২০২৬-এ আড়াইশো সিট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ক্ষমতায় আসবেন, মুখ্যমন্ত্রী হবেন। শুধু দলের নেতা-কর্মীরা কেউ প্ররোচনায় পা দেবেন না। নজর দিন সংগঠন মজবুত করতে।

উল্লেখ্য, গত ১৭ই নভেম্বর নন্দীগ্রাম- ১ ব্লকের ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়- কাণ্ডপসরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালকমন্ডলীর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চারটি আসন বেশি পেয়ে সমবায় দখল করে বিজেপি। কিন্তু এলাকার বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর নিজের বুথ নন্দনায়কবাড়ে বিজেপিকে পরাজিত করে জয় লাভ করে তৃণমূল প্রার্থী অনিমেষ দাস। সেই ঘটনায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতির ওপর বিকেলে নির্মমভাবে হামলা চালায় বিজেপির দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় ব্লক সভাপতি পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করা হলেও বাকি ছয় জন অভিযুক্ত এখনো অধরা। কুণাল ঘোষ বলেন, তৃণমূল ক্ষমতাশীল দল। তাই আজকে আমাদের এই সভা সুশৃংখলভাবে সংগঠিত হচ্ছে। এই ঘটনার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করণীয় আছে। পুলিশকে অসংখ্যবার অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে ডেপুটেশন যেমন দেব তেমনি ভেকুটিয়াতে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি আরও বৃদ্ধি করতে হবে। তৃণমূলের ওপর হামলা নিয়ে কুনাল ঘোষের বক্তব্য, “বিজেপি বুঝতে পারছে তৃণমূল ভালো কাজ করছে। তাই তৃণমূলের পাশে মানুষ আছে। ফলে বিজেপির পায়ের তলার মাটি এমনিই দুর্বল ছিল তা আরও দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তাই সেই জায়গায় বিজেপি পেরে উঠতে না পেরে হামলা করছে।

হামলার পর বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও মূল অভিযুক্তরা কিভাবে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছে এবং গ্রেফতার হচ্ছে না সেই বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন কুণাল ঘোষ। এদিনের গোটা প্রতিবাদ সভাটি অনুষ্ঠিত হয় নন্দীগ্রামের থানা মোড় এলাকায়। যেখানে কুনাল ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মাইতি, জেলার সহ সভাপতি শেখ সুফিয়ান সহ অন্যান্যরা। অসুস্থ অবস্থায় প্রতিবাদ সভাতে অংশ নেন নন্দীগ্রাম- ১ ব্লক তৃণমূল- কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গও।

3.
4.
5.
6.
7.
8.
9.
10.
11.