মহাকুম্ভে মাইকে নির্দেশ, যোগী প্রশাসনের আধিকারিকের ঘোষণায় পদপিষ্টের ঘটনা!

0
2

মহাকুম্ভ নিয়ে বছর ভরের প্রস্তুতির পরেও কোনও দুর্ঘটনাই বাকি রইল না প্রয়াগরাজে। মঙ্গলবার মধ্যরাতের পদপিষ্টের ঘটনার পরে ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মৃতদের সংখ্যা ঘোষণা করতে পারেনি যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) প্রশাসন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে মধ্যরাতে আচমকা সঙ্গমের কাছে দুর্ঘটনার কারণ খোঁজার পালা। সেখানেই উঠে এসেছে একটি ভাইরাল ভিডিও (ভিডিওর সত্যতা বিশ্ববাংলা সংবাদ যাচাই করেনি) যেখানে দেখা যাচ্ছে প্রয়াগরাজের (Prayagraj) আধিকারিক মধ্যরাতেই মাইকে প্রচার চালাচ্ছেন। আর সেখানেই তিনি বলছেন দ্রুত ঘুম থেকে উঠে স্নান (bath) করে নেওয়ার জন্য। আর তারপরেই সঙ্গমে সেই দৌড়াদৌড়ি, যার জেরে মৃত্যু অন্তত ১৫ জনের।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে মৌনী অমাবস্যায় স্নানের হিড়িক। যার জেরে প্রয়াগরাজের সঙ্গমে মারাত্মক দুর্ঘটনা। কিন্তু কেন মধ্যরাতে এভাবে এত মানুষ একসঙ্গে স্নানের জন্য ব্যস্ত হলেন। তাঁদের প্রতি কী কোনও নির্দেশ ছিল। যেখানে বুধবার সারাদিন স্নানের সুযোগ ছিল, কারণ অমাবস্যা সারাদিন ধরেই থাকবে। সেক্ষেত্রে মধ্যরাতে কেন স্নান করবেন সব পুণ্যার্থী একসঙ্গে। সেই উত্তর খুঁজতে গিয়েই সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর এক ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে প্রয়াগরাজের কমিশনার বিজয় বিশ্বাস পন্থ (B B Pant) ঘোষণা করছেন সবাই ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। এখানে শুয়ে থাকলে হবে না। উঠে পড়ুন স্নান (bath) করুন। এটা আপনাদের সুরক্ষার জন্যই বলা হচ্ছে। এরপরে আরও ভিড় হয়ে যাবে। তখন ধাক্কাধাক্কি শুরু হবে। তাই ঘুমিয়ে না থেকে উঠে স্নান সেরে নিন।

এইভাবেই নানা কথায় তিনি সঙ্গমের চরে ও বিভিন্ন আখড়ায় ঘুমন্ত সাধারণ পুণ্যার্থীদের ঘুম থেকে তোলার প্রচেষ্টা চালান রাত প্রায় ১টায়। এরপরই সঙ্গমে হঠাৎ হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। মৃত্যু হয় অসংখ্য পুণ্যার্থীর। আহত হন বহু। নিজের চোখের সামনে পরিজনকে হারিয়ে যেতে দেখেন বহু মানুষ। অথচ কিছুক্ষণের এই অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতির পরেই আবার প্রয়াগরাজ (Prayagraj) শান্ত হয়ে যায়। এমনকি বুধবার নতুন করে স্নান শুরু হওয়ার পরেও সারাদিন এমন ভিড় উপস্থিত হয়নি যা বিপদের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। তাহলে রাত ১টার সময় কেন হয়েছিল এমন ঘোষণা, যা হুড়োহুড়ির পরিস্থিতি তৈরি করে।

যোগী প্রশাসনের দাবি, মধ্যরাত থেকে প্রয়াগরাজে ভিড় বাড়তে থাকে। তাই কমিশনার বি বি পন্থ (B B Pant) ঘোষণা করেছিলেন। সেখানেই প্রশ্ন উঠেছে, যোগী প্রশাসনের কী ভিড় সামলানোর পরিকাঠামো ছিল না। নাহলে পুণ্যার্থীরা কখন স্নান করবেন তা নিয়ে যে ধরনের ঘোষণা কখনও হয় না, তেমন ঘোষণা কেন করা হবে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন, কত ভিড় তার কী আন্দাজ ছিল না প্রশাসনের। যে ভিড় বেলা বাড়তেই কমে যায়। এমন পরিস্থিতি হয় প্রয়াগরাজে যে পুণ্যার্থীরা গাড়ি চড়ে, শোভাযাত্রা করে সঙ্গমের কাছে চলে আসতেও সক্ষম হন। তবে কোন ভিড়ের আশঙ্কা করা হয়েছিল রাত ১টার সময়। নাকি কিছু মানুষকে মধ্যরাতে হয়রান করার জন্য ইচ্ছাকৃত ঘোষণা করে হুড়োহুড়ির পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল, উঠেছে প্রশ্ন। সেক্ষেত্রে মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনা সত্যিই দুর্ঘটনা, না ইচ্ছাকৃতভাবে (man made) তৈরি করা, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।