নিয়ম ভেঙেই বিল পাস! সংসদীয় ক্যালেন্ডার তৈরির দাবি তৃণমূলের

0
4

বছরে নূন্যতম ১০০ দিন ধরে সংসদ চালাতেই হবে, আগে থেকেই তৈরি করতে হবে সংসদীয় ক্যালেন্ডার, যেখানে বহু দিন আগে থেকেই জানা যাবে কবে কিভাবে সংসদের অধিবেশন (Parliamentary session) পরিচালিত হবে- সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনের আগেই দাবি তুলল তৃণমূল কংগ্রেস৷ দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি কোনওদিনই শ্রদ্ধাশীল নয় মোদি সরকার৷ বিগত দশ বছর ধরেই সংসদীয় গণতন্ত্রর অমর্যাদা করেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ (NDA) সরকার৷ এই আবহে প্রচলিত ট্রেন্ড হিসেবে সামনে আসছে বছরের প্রত্যেক সংসদীয় অধিবেশনের মেয়াদ কাটছাঁট করা এবং গুরুত্বপূর্ণ বিল (bill) গুলিতে জনগণের অভিমত সংগ্রহ না করেই পাস করিয়ে দেওয়া৷ এই ভাবে সংসদীয় গণতন্ত্রের অবক্ষয় মেনে নেওয়া হবে না দাবি জানিয়ে অবিলম্বে সংসদীয় ক্যালেন্ডার (Parliamentary calendar) তৈরি এবং প্রকাশের দাবি তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন (Derek O’Brien)৷ রবিবার এই প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান প্রকাশ করতে গিয়ে ডেরেকের প্রশ্ন, যদি স্কুল-কলেজ গুলি আগে থেকেই তাদের ক্যালেন্ডার তৈরি করতে পারে, তাহলে সংসদ কেন পারবে না তাদের কার্যসূচি সম্পর্কিত ক্যালেন্ডার তৈরি করে আগাম প্রকাশ করতে ? সংসদকে একটি গভীর, অন্ধকার প্রকোষ্ঠে পরিণত করছে মোদি সরকার৷ গণতন্ত্র বিরোধী এই পদক্ষেপকে বন্ধ করতে হবে৷ মোদি সরকার জনতার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পালাতে পারবে না৷

কেন তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সংসদীয় ক্যালেন্ডার (Parliamentary calendar) তৈরির দাবি জানানো হচ্ছে, তার সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক দাবি করেন, লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যরা শুধুমাত্র আইন প্রণয়নের জন্য নির্বাচিত হন না৷ সরকারের কাছে জবাবদিহি চাইতে, তাদের ক্রিয়াকলাপ যাচাই করতে এবং জাতীয় গুরুত্বের বিষয়ে আলোচনার জন্যও তাদের নির্বাচন করা হয়ে থাকে৷ সংসদীয় ক্যালেন্ডার তৈরি করা হলে এই দায়িত্বগুলি আরও ভালো ভাবে পূরণ করা সম্ভব হবে৷ এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়, গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের (bill pass) আগে জনতার মতামত সংগ্রহের জন্য যে ৩০ দিনের মেয়াদ রাখা বাধ্যতামূলক, সেই নীতি না মেনেই জনতার মতামত ছাড়াই সংসদে (Parliament) পাস করানো হয়েছে ৫৪ শতাংশ বিল৷ এই অগণতান্ত্রিক (anti-democratic) পদ্ধতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, দাবি জানান তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক৷ এই প্রসঙ্গেই ডেরেক বলেন, সংসদের অধিবেশনের বিজ্ঞপ্তি জারির দিন থেকে সংসদ শুরু হওয়ার মেয়াদও বাড়াতে হবে৷ আসন্ন বাজেট অধিবেশনের (Budget Session) মাত্র ১৫ দিন আগে অধিবেশন শুরুর বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়েছে৷

তাত্‍পর্যপূর্ণ হল, গত বছর সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankar) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল বিরোধী শিবির৷ তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগেই নিয়ে আসা হয়েছিল এই অনাস্থা প্রস্তাব, যেখানে তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষের (Saagrika Ghosh) চিঠিতে সাক্ষর করেছিলেন বিরোধী শিবিরের তাবড় সাংসদরা৷ মোদি সরকারের ষড়যন্ত্রে এই অনাস্থা খারিজ হওয়ার পরে এবারের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে (Budget Session) আরও একবার ধনকড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার কথা ভাবছে বিরোধী শিবির৷ সূত্রের দাবি, গতবারের মত এবারও বড় ভূমিকায় দেখা যেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসকে৷ ৩১ জানুয়ারি শুরু হবে সংসদের বাজেট অধিবেশন, সাধারণ বাজেট পেশ হবে ১ ফেব্রুয়ারি৷ প্রথম পর্যায়ের সংসদীয় অধিবেশন চলবে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত৷