“এরা তো দেশের নামও ভুলিয়ে দেবে! এটা অন্যায়। ভারতের স্বাধীনতা চিরকাল থাকবে। আমি ওই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করছি”- স্বাধীনতা দিবস নিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবতের (Mohan Bhagwat) মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করলেন বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মমতা বলেন, যেহেতু এটা দেশের বিষয়, কোনও রাজনীতির বিষয় নয়, সুতরাং তিনি নবান্ন (Nabanna) থেকেই প্রতিক্রিয়া দেবে। এর পরেই তীব্র আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবিরোধী’ মন্তব্য করেছেন ভাগবত।
মমতা বলেন, “বাংলা একসময় ভারতের রাজনীতি ছিল। পাকিস্তান, বাংলা সব এক ছিল তখন। স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি, তার পর পঞ্জাব। বাকিদেরও রয়েছে। আমি মনে করি, আমাদের দেশ ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীন হয়। এই যে মন্তব্য করেছেন উনি, হয় জেনে করেছেন, অথবা না জেনে, আমি জানি না। কিন্তু আমি মনে করি, এটা দেশবিরোধী মন্তব্য।”
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে ভাগবত (Mohan Bhagwat) মন্তব্য করেন, “অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিনটি ‘প্রতিষ্ঠা দ্বাদশী’ হিসেবে পালিত হওয়া উচিত। কারণ ওই দিনই প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা লাভ করে ভারত।” তাঁর সেই মন্তব্যে নিন্দার ঝড় ওঠে রাজনৈতিক মহলে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট সার্বভৌম দেশের প্রতিষ্ঠা হয়। আপনারা কী মনে করেন? যে কোনও দল বা সংগঠন চাইলেই কি দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, যখন ইচ্ছে পাল্টে দিতে পারে? এটা হয় না। আমাদের স্বাধীনতা আমাদের গর্ব। আমাদের প্রজাতন্ত্র আমাদের গর্ব, গণতন্ত্র গর্ব আমাদের। গান্ধীজি, নেতাজি, আবুল কালাম আজাদ, বাবাসাহেব অম্বেদকর, ভগৎ সিং থেকে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বিদ্যাসাগর, রামমোহন রায়, চিত্তরঞ্জ দাস, মাতঙ্গিনী হাজরা, বিনয়-বাদল-দীনেশ, বাঘাযতীন- গান্ধীজিকে জাতির পিতা বলা হয়- বাংলায় বসে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। সাধারণ মানুষ আন্দোলনে ছিলেন, কতশত মানুষ দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আমরা ভুলিনি। প্রাণে মারা যেতে হয়েছিল গান্ধীজিকে, সুভাষচন্দ্রের জন্ম আছে, মৃত্যু নেই, কী করে ভুলে যাব?”
ভাগবতের মন্তব্য অত্যন্ত ‘বিপজ্জনক’ বলে মত মমতা। তাঁর মতে, এই মন্তব্য প্রত্যাহার করা উচিত। তীব্র আক্রমণ করে মমতা বলেন, “এরা তো দেশের নামও ভুলিয়ে দেবে? এটা অন্যায়। ভারতের স্বাধীনতা চিরকাল থাকবে। আমি ওই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করছি। আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। ধারণা ছিল না, এমন কথা কেউই বলতে পারেন। ইতিহাসের অনেক অধ্যায় বদলানো হয়েছে, সংসদে হাত তুলে সংবিধানের অনেক পাতা বদলানো হয়েছে। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের কথা বলেছিলেন জওহরলাল নেহরু, স্বামী বিবেকানন্দ। সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেসছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব। আমরা তাঁদের কথা মানি। হঠাৎ হুজুগ উঠল আর সবাই মেতে উঠল তা হবে না। দেশের জন্য নিবেদিত আমরা। দেশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রাণ দিতে পারি। এসব সহ্য করব না।”
–
–
–
–
–
–





























































































































