গল্ফগ্রিনে কাটা মুন্ডু উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য বেড়েই চলেছে। ধৃত আতিউর লস্করকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্তকারীদের চক্ষু চড়কগাছ।জানা গিয়েছে, গত ১২ তারিখ মৃত খাদিজাকে সঙ্গে নিয়ে রিজেন্ট পার্কের নির্জন এলাকায় এক পরিত্যক্ত বাড়িতে যায় আতিউর। সেখানে দুজনের মধ্যে ঝামেলা হয়। মহিলাকে ধাক্কা মারে সে। দেওয়ালে তার মাথা ঠুকে যায়। এর পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে খাদিজার গলা টিপে শ্বাসরোধ করে আতিউর। বিকেল পাঁচটা থেকে রাত নটার মধ্যে মহিলাকে খুন করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও তা বলা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, খুনের পর রাতে খাদিজার দেহ তিন টুকরো করে আতিউর। দেওয়ালে পুট্টি করার ধারালো ধাতব দিয়ে সেই কাজ করা হয়। যে বস্তায় রংয়ের কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী নিয়ে আসত আতিউর, সেই বস্তায় দেহাংশগুলি ভরা হয়। এর পর ভোর তিনটের দিকে বস্তায় ভরা দেহাংশ নিয়ে গিয়ে গল্ফগ্রিন ও রিজেন্ট পার্কে এলাকায় ফেলে দেয়। প্রথমে মুন্ডু আলাদা প্লাস্টিকে মুড়ে বস্তায় ভরে গল্ফগ্রিনে জঞ্জালের স্তূপে ফেলে আতিউর। বাকি দেহাংশ বস্তায় ভরে রিজেন্ট পার্ক কলোনি এলাকায় নির্মীয়মাণ বাড়ির জলাশয়ের কাছে ফেলে দেয়। ভোর তিনটের পর রিজেন্ট পার্কের যে আবাসনে কাজ করত, সেখানেই ফিরে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়েছিল সে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, খুনের পরের দিন রংয়ের কাজ সেরে সন্ধের পর সে ডায়মন্ড হারবারের পঞ্চগ্রামের বাড়িতে ফেরে। রাতেই সিট সদস্যরা তার বাড়িতে গিয়ে আটক করে আতিউরকে। টানা জেরায় নিজের দোষ স্বীকার করেছে সে। জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবারে পারুলিয়া গ্রামে খাদিজা বিবির বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর মগরাহাটে পৈলানপাড়া গ্রামে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকতেন তিনি। রিজেন্ট পার্ক ও গল্ফগ্রিন এলাকায় কয়েকটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। ট্রেনে করে শহরে কাজে আসতেন। ওই একই ট্রেনে জামাইবাবু আতিউরও কাজে আসে। সে রংমিস্ত্রি। প্রতিদিন দুজনেই কাজ সেরে আবার একই ট্রেনে বাড়ি ফিরে যেত। আতিউর খাদিজার ছোটবোনের স্বামী। খাদিজার প্রেমে পড়েছিল আতিউর। কিন্তু খাদিজা সাড়া দেননি। সম্প্রতি জামাইবাবুর মোবাইল নম্বরও ব্লক করে দিয়েছিলেন খাদিজা। এরপরই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায় সে।
–
–
–
–
–
–
–
–
–