পর্যটকরা ইচ্ছে করলেই প্রবেশ করতে পারেন পাতালে। ঘুরে আসতে পারেন ১৩৫০ ফুট ভূ-গর্ভের ‘ডিপ স্লিপ’ থেকে। সম্প্রতি পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে এই স্থান। পর্যটকদের জন্যও দুয়ার খুলে গিয়েছে। পাতালের এই পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করে আপনি শান্তির ঘুম দিতে পারেন অক্লেশে।
এই পর্যটন কেন্দ্র ভিক্টোরিয়ান খনির নীচে। সেখানে তৈরি হয়েছে রাজকীয় হোটেল। সেই হোটেলে থাকা-খাওয়া-শান্তিতে ঘুমানোর সুযোগ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এটিই বর্তমানে বিশ্বের গভীরতম হোটেল। হোটেলটি ওয়েলসের স্নোডোনিয়া পাহাড়ের ১৩৭৫ ফুট নীচে অবস্থান করছে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিপ স্লিপ’, যার অর্থ গভীর ঘুম। এই হোটেলে রয়েছে টুইন বেড কেবিন, একটি ডাবল বেড এবং ডাইনিং। আর আছে একটি রোমান্টিক গ্রোটো রুম।
হোটেলটিকে একটি ‘রিমোট-ক্যাম্প অ্যাডভেঞ্চার এক্সপেরিয়েন্স’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সপ্তাহে মাত্র এক রাত খোলা থাকে হোটেলটি। সেটি হল শনিবারের রাত। অতিথিরা শনিবার সন্ধ্যায় এই হোটেলে যেতে পারেন। সে জন্য শনিবার সন্ধ্যা ৫টায় ব্লেনাউ ফেস্টিনিওগ শহরে পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে গাইড আপনাদের হোটেলে পৌঁছাতে সহায়তা করবে। এই হোটেলে পৌঁছতে হলে পাহাড়ে প্রায় ৪৫ মিনিট ট্র্যাক করতে হবে। আসলে এমন একটি জায়গায় হোটেলটি অবস্থিত যে, তা খাঁড়াই পথ। তবে প্রাকৃতিক দৃশ্য অনিন্দ্য সুন্দর। তা আপনাকে আকর্ষণ করবেই। ৪৫ মিনিট যাত্রার পর থামতে হবে কটেজে। সেখানে হেলমেট, ওয়েলিংটন বুট ও একটি বর্ম পরে নিতে হবে। নিতে হবে লাইট। তারপর বহির্বিশ্বকে বিদায় জানিয়ে প্রবেশ করতে হবে পাতালে। বিশ্বের বৃহত্তম এবং গভীরতম পরিত্যক্ত স্লেট খনির গভীরে প্রবেশ করে বন্ধুর পথ পেরিয়ে যেতে হবে গন্তব্যে। এই পথে ক্ষয়প্রাপ্ত সেতু ও প্রাচীন খনির সিঁড়ি দিয়ে যেতে হবে। ওই সেতুটি ১৮১০ সালে থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। আর এই পথে খনি-কর্মীদের জীবন সম্পর্কে গাইড আপনাকে সমস্ত ঐতিহাসিক তথ্য প্রদান করবে। হোটেলে নামতে সময় লাগবে প্রায় এক ঘণ্টা। তারপর একটি বড় ইস্পাত দরজা দেখতে পাবেন। সেখানেই ভ্রমণের সমাপ্তি।
ইস্পাতের দরজা পেরিয়েই আপনি প্রবেশ করবেন ডিপ স্লিপ বা গভীর ঘুমের ঘরে। সেখানে সিঙ্গেল বেড-সহ অসংখ্য ছোটো ছোটো কেবিন এবং অন্যান্য বিভিন্ন সুবিধা পাবেন। ‘গভীর ঘুমে’র অন্দরে রাত কাটিয়ে ফের সকালে বহির্বিশ্বে ফিরে আসতে পারবেন পৌনে দু-ঘণ্টার ফিরতি যাত্রায়।
আরও পড়ুন- KIFF: সিনেপ্রেমীদের স্বাগত কলকাতার, উৎসবের প্রথম দিনে ‘কাবুলিওয়ালা’র নস্টালজিয়া