ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়নের সময় বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, কথা সুন্দরবনে মাস্টার প্ল্যান নিয়েও

0
4

ডিভিসি-র ছাড়া জলে ভাসে ঘাটাল। কেন্দ্রের কাছে দীর্ঘ বছর ধরে আবেদন করেও রূপায়নের করা যায়নি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান (Ghatal Master Plane)। এবার রাজ্য সরকারই সেটা করছে। তবে এই নিয়ে সময়সীমা বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। শুক্রবার ‘ডানা’ পরবর্তী পরিস্থিতি দেখতে নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ডিপিআর হয়ে গিয়েছে। ৪০০ কোটি টাকার কাজ অলরেডি হয়েছে। আমরা চাই ২ বছরের মধ্যে কাজটা সম্পূর্ণ হোক।” একইসঙ্গে এদিন সুন্দরবন মাস্টার প্ল্যানের কথাও বলেন তিনি।মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান তৈরির জন্য ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট (DPR) তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। ২ বছরের মধ্যে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে এই ধরনের প্রকল্পে পরিযায়ী শ্রমিক যাঁরা ফিরে এসেছেন রাজ্যে তাঁদের কাজে লাগাতে হবে।কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষী না থেকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান (Ghatal Master Plane) রূপায়নের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী দু বছরের মধ্যে ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা বেধে দিয়েছেন তিনি। দিন কয়েক আগে DVC-র অনিয়ন্ত্রিত জল ছাড়ায় প্লাবিত হয় ঘাটাল মহকুমা-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশ। ফের একবার ঘূর্ণিঝড় ডানার হানায় প্লাবনের আশঙ্কা। এই আবহেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান দ্রুত রূপায়ণের লক্ষ্যে ফের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

দক্ষিণবঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতায় ১৯৮০ সালে এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল। ৮২ সালে প্রকল্পটির শিলান্যাস হয়। এটি রূপায়ণের জন্য প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকার মোট ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ অর্থ দেওয়ার কথা বলে। পরে তা কমিয়ে পঞ্চাশ শতাংশ করে। যদিও সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেনি কেন্দ্র। রাজ্য সরকারের তরফে ২০১২ সালে ১২০০ কোটি টাকার একটি বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়ের পরেও কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পটির জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ না করায় রাজ্য সরকার নিজের তহবিল থেকেই সম্পূর্ন অর্থ খরচ করে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে কথা নিজেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান মূলত ঘাটালকে ঘিরে থাকা মূল নদী এবং শাখা নদীগুলির নিয়মিত ড্রেজিং করা। যাতে সেগুলির জলধারণ ক্ষমতা বাড়ে এবং বন্যার হাত থেকে ঘাটাল রক্ষা পায়। বলা হয়, পাম্প হাউস তৈরির অনুমোদন চন্দ্রকোনা-ঘাটাল-দাসপুর-সহ পাশ্ববর্তী এলাকায়। নদীপথ সংস্কার করা হবে কংসাবতী ও শিলাবতীতে। স্থানীয় খালগুলিতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, খাল সংস্কার। সেই সঙ্গে ঘাটালের নদী ও খালগুলিতে লক গেট বাসানো প্রকল্পের লক্ষ্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সরকার কর্মশ্রী প্রকল্প শুরু করেছে। যেখানে ৫০ দিনের কাজ দেওয়া হয়। অনেক পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফিরে এসেছেন। তাঁদের কাজে লাগিয়ে কাজটা তাড়াতাড়ি করো। যত ক্ষতি হচ্ছে, তা তো আমাদের হচ্ছে। বাংলাকে তো বন্যায় এক পয়সা দেওয়া হয় না। ঘূর্ণিঝড়ে দেওয়া হয় না। কিন্ত, আমাদের দায়বদ্ধতা মেনে নিয়ে কাজ করতে হবে।”

একইসঙ্গে এদিন সুন্দরবন মাস্টার প্ল্যানের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, “সুন্দরবনে মাস্টার প্ল্যান নিয়ে নীতি আয়োগকে আগেও বলেছি। আবার লিখব।”