একদিনেক দরজায় কড়া নাড়ছে দুর্গাপুজো। আর তার সঙ্গে ব্যারাজের থেকে ছাড়া জলে বানভাসি বাংলার উত্তর থেকে দক্ষিণ। রবিবার, উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর সেখানে থেকেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের তাঁর বার্তা, উৎসবের আবহে বন্যার্ত মানুষদের ভুলে গেলে চলবে না। এদিনের বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহও।
নেপালের বন্যায় উত্তরবঙ্গের (North Bengal) একাধিক জেলায় বানভাসি। DVC-র ছা়ড়া জলে দক্ষিণের একাধিক জেলা প্লাবিত। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে এদিন উত্তরের জেলাগুলির সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক দিকে সামনেই দুর্গাপুজো। এই আবহে উত্তরকন্যা থেকে বড় বার্তা দিলেন মমতা (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, “এক দিকে পুজো। অন্য দিকে বন্যার ফাঁড়া। প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের পাশে থাকতে হবে। পুজো বলে বন্যা ত্রাণের কাজে মানুষের পাশ থেকে সরে গেলে হবে না। এটিও একটি সেবা। বন্যাত্রাণে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
প্লাবনের জেরে ফসলের ক্ষতির কথা মাথায় রেখে বাংলার শস্য বিমায় আবেদনের মেয়াদকালও বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, শস্য বিমার জন্য প্রতি বছর ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া থাকে। কিন্তু এ বার সেপ্টেম্বেরের শেষ সপ্তাহে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই কারণে, শস্য বিমার আবেদনের সময়সীমা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। এদিন ফের একবার তিনি জানান, বৃষ্টি থেমে গেলেই শস্য বিমার আওতায় টাকা দেওয়া হবে।
উত্তরবঙ্গে পৌঁছেও ফের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার বন্যায় আমাদের এক পয়সাও দেয় না। যদিও বন্যা নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কেন্দ্রের অধীনে। ফারাক্কা বাঁধও ড্রেজিং করা হয় না। ঠিক মতো ড্রেজিং করলে ফরাক্কা বাঁধে আরও জল জমা রাখতে পারত। সেই কারণে বিহারও ডোবে, বাংলাও ডোবে। ড্রেজ়িং করা হলে আরও ৪ লাখ কিউসেক জল ধারণ করতে পারত। তা হলে এই জায়গাগুলি অনেকটা কম ভুগত।”
বৃষ্টি এবং বানভাসিতে গ্রামাঞ্চলে সাপের উপদ্রব বাড়ে। সেই কারণে প্রতিটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অ্যান্টিভেনম মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয়দের মমতার পরামর্শ, সাপে কামড়ালে বাড়িতে ফেলে না রেখে দ্রুত নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন, গঙ্গা পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা এলাকায় জল না থাকলেও যেন সরকারি ত্রাণ শিবিরে গিয়ে আশ্রয় নেন। মমতা বলেন, “দয়া করে কষ্ট করে কয়েকটা দিন ত্রাণ শিবিরে থাকুন। জীবন থাকলে বাড়িও বাঁচবে। কিন্তু জীবন চলে গেলে, শুধু বাড়ি থেকে কোনও লাভ নেই। একটি জীবন খুব দামি।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, মহালয়ার ভরা কটাল না কাটা পর্যন্ত ৬ জেলায় ২জন করে সচিব পর্যায়ের আমলা থাকবেন। মমতা বলেন, “ওই সচিবেরা সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবেন। কোথাও সমস্যা হলে আমাদের জানাবেন, সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।”










































































































































