আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করছে তৃণমূল (TMC)। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোধ্যায় (Mamata Banerjee) থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) দোষীর ফাঁসির দাবি জানান। এই ধরনের ঘটনায় এনকাউন্টারের আইন আনার পক্ষে সওয়াল করেন অভিষেক। কিন্তু প্রতিবাদের নামে সাধারণ মানুষকে সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিকদলের হুজুগের বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে (Supti Pandey), তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), কাউন্সিলর স্বর্ণকমল সাহা, অরূপ চক্রবর্তী (Arup Chakraborty), অয়ন চক্রবর্তী, মীনাক্ষি গঙ্গোপাধ্যায়-সহ উত্তর কলকাতা তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার, বেলা আড়াইটে কলকাতার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে দীনেন্দ্র স্ট্রিটে বাম আমলে বানতলায় ধর্ষণ-খুনের শিকার অনিতা দেওয়ানের (Anita Dewan) বাড়ির সামনে থেকে দ্রুত বিচারের দাবি ওঠে।
কুণাল ঘোষ বলেন, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের (R G Kar Medical College) ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। দোষীদের কঠোরতম শাস্তি দাবি করছেন তাঁরা। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোধ্যায় থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দোষীর ফাঁসির দাবি জানান। এই ধরনের ঘটনায় এনকাউন্টারের আইন আনার পক্ষেও সওয়াল করেন অভিষেক। কিন্তু প্রতিবাদের নামে যেভাবে বিরোধীরা ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমেছে, তার তীব্র বিরোধিতা করেন কুণাল। তিনি বলেন, বাম আমলে যখন জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী, তখন বানতলায় কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের গাড়ি তাড়া করে তাঁকে গণধর্ষণ করে নৃশংস খুন করা হয়। শুধু তাঁকে নয়, তাঁর দুই সহযোগীকেও ধর্ষণ করা হয়। গাড়ির চালককে কুপিয়ে খুন করা হয়। কিন্তু সেই সময় প্রকৃত দোষীরা সাজা পাননি বলে অভিযোগ কুণালের। তিনি জানান, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বলেন, ‘এরকম তো কতই হয়’। সেই কথা তুলে ধরে কুণাল জানান, বর্তমান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আর জি করের ঘটনার প্রথম থেকেই এই ঘটনা নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। মৃতার বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে আশ্বাস দেন, প্রকৃত দোষীরা কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে। পুলিশ কাজ করছিল। কিন্তু আদালতের নির্দেশে তদন্ত গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। তৃণমূল নেতার কথায়, অনিতা দেওয়ানের বাড়ির সামনে থেকেই আমরা সিবিআই-এর কাছে দ্রুত তদন্তের দাবি জানাব। কিন্তু এই মেয়েদের রাত দখল-এর হুজুগের তীব্র বিরোধিতা করেন কুণাল। তাঁর কথায়, এটি বিরোধীদের পাতা রাজনীতির ফাঁদ। এটিতে পা না দেওয়ার জন্য শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন জানান কুণাল।
বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে জানান, আর জি করের (R G Kar Medical College) ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, প্রতিবাদের নামে রাজনীতি বন্ধ করুন। বলেন, এমন কিছু করবেন না যাতে ছেলেদের প্রতি ঘৃণার জন্ম না দেয়। একই সঙ্গে কন্যা সন্তানের মা সুপ্তির পরামর্শ, ছেলের মায়েরা শক্ত হন। যদি বোঝেন সে অন্যায় করেছেন, তিনি নিজে নিয়ে যান পুলিশের কাছে।
৩০ মে ১৯৯০-এ বানতলায় অনিতা দেওয়ান-সহ তিন মহিলার ধর্ষণ-খুনের প্রকৃত দোষীরা সাজা পাননি বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্বের। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ধর্ষণ থেকে শুরু করে গুজরাটের বিলকিস বানুর ঘটনার উদাহরণ দিয়ে বিজেপির মুখোশ খুলে দেন তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। একই সঙ্গে আর জি করের ঘটনায় দোষীদের চরম শাস্তির পাশাপাশি যাঁরা এই ঘটনাকে আড়াল করতে চেয়েছিলেন তাঁদেরও শাস্তির দাবি জানান অরূপ। তবে, রাত দখলের নামে ঘোলাজলে মাছ ধরার তীব্র নিন্দা করেন তিনি।