আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে হেফাজতে নিয়ে টানা জেরা করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে চলছে মৃতার ময়নাতদন্ত রিপোর্টের বিশ্লেষণ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে মৃতার দেহ থেকে প্রায় দেড়শ গ্রাম দেহরস মিলেছে। এর ফলে প্রাথমিকভাবে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, নিহত চিকিৎসককে একাধিক ব্যক্তি মিলে ধর্ষণ ও হত্যা করে। অন্যদিকে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে কারা জড়িত তা খুঁজতে তদন্ত আরও জোরদার করেছে কলকাতা পুলিশ। সেই লক্ষে সিটের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আগে ৭ জনের ‘সিট’ ছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৬৪। মোট তিনটি শিফ্টে দৈনিক তদন্তের কাজ চলবে। একটি শিফ্টে কাজ করবেন ৫০ জন। লক্ষ্য একটাই, কার কার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল সঞ্জয়ের? সঞ্জয় ছাড়াও আর কে কে জড়িত এই ঘটনায়?

অন্যদিকে ধৃতের ডিএনএ নমুনা ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। পুলিশ বিভিন্ন ফুটেজ ইত্যাদি খতিয়ে দেখে বার করার চেষ্টা করছে যে, ঘটনাস্থলে ধৃত একা ছিলেন, না তাঁর সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিলেন। কারণ, মৃতার শরীরের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ থেকে এমন ধারণা জোরালো হচ্ছে যে, ধৃতের একার পক্ষে ওই ঘটনা ঘটানো কঠিন। পুলিশ তা-ই সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে। আবার ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিক ভাবে পুলিশ দাবি করছে, মৃতার শরীরের কোনও হাড় ভাঙা নেই। যদিও শরীরের উপরিভাগে ক্ষত রয়েছে। পুলিশের এই প্রাথমিক দাবি পুরো বিষয়টির মোড় খানিকটা হলেও ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। তবে মৃতার ডিএনএ টেস্ট করানোর পর এই ঘটনার বিষয়ে অনেক তথ্য সামনে আসবে বলে মনে করছেন পুলিশ।
পাশাপাশি এই নির্মম হত্যাকান্ডের তদন্ত করতে সোমবার ৭ জন জুনিয়র চিকিৎসককে জিজ্ঞেসাবাদ করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই সেদিন অন ডিউটি ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে ঘটনার দিন ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা যুক্ত, মূলত সে বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে খবর। এর পরে অন্য ফ্লোরে যাঁরা ছিলেন তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অন্য ফ্লোর-সহ ওই ফ্লোরে গত ১ মাসের গতিবিধি দেখার জন্য ৩০ দিনের সিসিটিভি খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার ছাড়া আর কারও যোগ আছে কিনা, কেউ ষড়যন্ত্রে যুক্ত কিনা সেইগুলি নিশ্চিত করতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে হাসপাতালে আন্দোলনরত পড়ুয়া চিকিৎসকদের বয়ান রেকর্ডের পালাও। ঠিক কী কারনে এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড চালানো হল তার তদন্ত করতে চাইছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, পাঁচ দিনের মধ্যে কলকাতা পুলিশ তদন্তে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ না-দেখাতে পারলে তিনি ঘটনার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়ে দেবেন। সেই কারণেই তদন্তের গতি আরও দ্রুত করতে বাড়তি ‘সক্রিয়’ হয়েছে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুন- এবার মহিলাদের সমান ‘চাইল্ড কেয়ার লিভ’ পাবেন পুরুষেরাও! নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের







































































































































