এক সেকেন্ডের মধ্যে চটপট বলে দিতে পারেন একের পর এক প্রশ্নের উত্তর। পৃথিবীর সমস্ত খুঁটিনাটি তাঁর নখদর্পণে। প্রশ্ন করলে চোখের নিমেষেই মিলছে একের পর এক উত্তর। সময় যত গড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন এক বাঙালি শিক্ষিকা (Bengali Teacher)। অনেকেই হয়তো এই মহিলাকে চেনেন, আবার অনেকে হয়তো ভাবছেন কে এই মহিলা? দেশের প্রথম মাস্টারমাইণ্ড (First Mastermind) এই বাঙালি শিক্ষিকা। তবে কী তাঁর পরিচয়? কে তিনি? আসুন জেনে নেওয়া যাক!


তিনি দ্বৈতা দত্ত। গোল চশমা আর সবুজ শাড়ি পরা এই মহিলা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। গত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে ফিরে আসছে দ্বৈতা দত্তর ক্যুইজের বিভিন্ন ক্লিপিংস। তাঁর সাবলীলভাবে একাধিক কঠিন প্রশ্নের জবাব শুনে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছে সকলেরই। আর তারপরই এই বাঙালি মধ্যবয়স্কা মহিলাকে নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দ্বৈতা অসমের বাঙালি, কর্মসূত্রে তিনি বর্তমানে থাকেন দেরাদুনে। সেখানকার একটি স্কুলে ইতিহাস পড়ান তিনি। ১৯৯৮ সালে প্রথম মাস্টারমাইন্ড চ্যাম্পিয়নের তকমা পান দ্বৈতা। ফাইনাল রাউন্ডে দ্বৈতার একের পর এক জবাবে মুগ্ধ হয়ে যান ক্যুইজমাস্টার এবং বিচারকরা। তবে অসমে জন্ম হলেও দ্বৈতা দত্তর বেড়ে ওঠা কলকাতাতেই। তাঁর বাবাও ইতিহাস এবং কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সে পারদর্শী ছিলেন। বাবার থেকেই ইতিহাস এবং সাহিত্য সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি হয় দ্বৈতার। ছেলেবেলা থেকেই কঠিন কঠিন প্রশ্নের চটজলদি উত্তর দেওয়ার কৌশল রপ্ত করে ফেলেছিলেন তিনি। স্কুলেও একাধিক ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন, পুরস্কারও পেতেন।


এরপর আটের দশকের শেষদিকে দ্বৈতা দেরাদুনে পাড়ি দেন। সেখানকার ওয়েলহাম গার্লস স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষিকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পাশাপাশি কিছুটা সময় দ্বৈতা কাটিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে। তবে কীভাবে এম্ন সব কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন তিনি? এই প্রসঙ্গে তিনি সাফ জানান, বিবিসি মাস্টারমাইন্ড প্রতিযোগিতা তাঁর অতি প্রিয় ছিল। তিনি সেই অনুষ্ঠানে দেখতেন, অনায়াসেই প্রতিযোগীদের জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে পারছেন। কিন্তু, দ্বৈতা কখনও ভাবেননি বিবিসি মাস্টারমাইন্ড প্রতিযোগিতা ভারতেও শুরু হবে। সেই প্রতিযোগিতার প্রথম সিজনের প্রথম চ্যাম্পিয়নের পুরস্কারটি তিনিই পান। তবে বর্তমানে দ্বৈতা অসমে বসবাস করেন। সেখানে বালিপাড়ায় অসম ভ্যালি স্কুলে ইতিহাসের শিক্ষিকা তিনি। এখনও ইতিহাস, বিজ্ঞান, ভ্রমণ, পরিবেশ, সাহিত্য, সাধারণ জ্ঞান নিয়ে অবসর সময় পড়ুয়াদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করেন দ্বৈতা দত্ত।
উল্লেখ্য ২০০৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে শিক্ষকদের জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত করে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের হাতে থেকে সে পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন তিনি। ২০০৪ সালে তিনি জেমস এডুকেশন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। পরবর্তীকালে তিনি কৌন বনেগা ক্রোরপতিতেও অংশ নিয়েছিলেন। সেখানেও ক্যুইজে তাঁর পারদর্শীতা মুগ্ধ করেছিল অমিতাভ বচ্চনকে। সেই ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে।










































































































































