বাংলাদেশের সাংসদের শেষ হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে

0
4

কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে রহস্যমৃত্যু বাংলাদেশি সাংসদ আনোয়ারুল আজিমের। ঘটনার তদন্তে নেমে একের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, তাঁর মৃত্যুর নেপথ্যে ব্যবসায়িক শত্রুতাই কাজ করেছে। এ রাজ্যের পুলিশের তথ্য বলছে, এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে ঢাকা থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা হল সৈয়দ আমানুল্লাহ, মুস্তাফিজুর এবং ফয়সল আলি। তাঁদের জেরা করে উঠে আসছে আমেরিকাবাসী আখতারুজাম্মান ওরফে সাহিনের নাম। পুলিশের অনুমান এই সাহিনই আজিম খুনের মাস্টার মাইন্ড।

তবে এরা ছাড়াও ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক মহিলাও রয়েছে। জানা গিয়েছে, এই সাহিনের সঙ্গেই ব্যবসায়ীক কোনও ঝামেলা চলছিল আজিমের। তিনি চিকিৎসা করাতে কলকাতায় আসছেন জানার পরই তাঁরে খুনের ছক কষা হয়েছিল। সেই মতো খুনিরা আগে থেকেই কলকাতায় এসে ডেরা বেধেছিল। তারাই আজিমকে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে ডেকেছিল।

গত ১৩ মে বরানগরের বন্ধুর বাড়ি থেকে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে আসেন আজিম। প্রাথমিক অনুমান সেখানেই তাঁকে খুন করা হয়। ওই ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া রক্তের দাগ ও অন্যান্য নমুনা থেকে খুনের তত্ত্বই জোরাল হচ্ছে। পুলিশের অনুমান খুনের পর একটি অ্যাপ ক্যাবে করে দেহ পাচার করা হয়। ঘটনার যুক্ত থাকার অভিযোগে এক ক্যাব চালককেও আটক করে জেরা করছে পুলিশ। কাজ সেরে অভিযুক্তরা বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। তবে পুলিশের কাছে ঘটনার পাকাপোক্ত কোনও তথ্য প্রমাণ নেই। রয়েছে অনেক প্রশ্ন। এখন সে সবেরই উত্তর পেতে তদন্ত চলছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, শেষবার তাঁর ফোনের লোকেশন ছিল উত্তরপ্রদেশ। খুনের পর সবাইকে বিভ্রান্ত করতেই তাঁর মোবাইলটি উত্তরপ্রদেশে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সন্দেহ পুলিশের। এবার প্রকাশ্যে এসেছে আনোয়ারুলের শেষ হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ। আততায়ীদের মধ্যে একজন আনোয়ারুলকে খুনের পর সবাইকে বিভ্রান্ত করতে তাঁর মোবাইলটি উত্তরপ্রদেশে নিয়ে যান বলে সন্দেহ পুলিশের। খুনের পর খুনি ওই সাংসদের মোবাইল থেকেই হোয়াটস অ‌্যাপ করেছিল। এমনই সন্দেহ পুলিশের।পুলিশ তদন্ত করে জেনেছে, উত্তরপ্রদেশের মুজফফরপুরে মোবাইলের শেষ টাওয়ার ছিল। মাঝে মাঝে মোবাইল খোলা হচ্ছিল। তবে বেশিরভাগ সময়ের জন‌্যই বন্ধ করে রাখা হয়েছিল ফোনটি।

পুলিশের মতে, যে ব‌্যক্তি পুলিশ ও সাংসদের পরিবারের লোকেদের বিভ্রান্ত করতে মোবাইল নিয়ে পালিয়েছে, সে বাংলাদেশিও হতে পারে। আবার বাংলাদেশি আততায়ীদের এই রাজ্যের লিঙ্কম‌্যানও হতে পারে সে। এমন সম্ভাবনাও রয়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ মে নিউটাউনের আবাসনেই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় তাঁকে। খুনের পর টুকরো টুকরো করে কাটা হয় দেহ। ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিনদিন ধরে দেহাংশ অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। দেহের কিছু অংশ ওই ফ্ল্যাটের ফ্রিজে রাখা রয়েছে বলেই খবর। এমনকি ফ্ল্যাট থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে।