লোকসভা নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি বিচারপতির পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলে যোগদান করা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় “রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য” প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের জীবন অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছেন, প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রাক্তন বিচারপতির রায়ে চাকরি হারানো ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের। এমনকি মিডিয়ার লাইম লাইটে আসার জন্যই তিনি একপেশে রায় দিয়েছিলেন বলে একেবারে নাম করে অভিযোগ করলেন ‘২০১৭ শিক্ষক শিক্ষিকা মণ্ডলী একতা মঞ্চ’-এর শিক্ষকরা। তদন্তকারী সংস্থা ইডি-সিবিআই নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।
২০২৩ সালের ১২ মে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কলকাতা হাইকোর্টের নামে দেওয়া রায়ে বাতিল হয়ে গিয়েছিল ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকার চাকরি। তারপর থেকে তাঁদের চাকরি বৈধ না অবৈধ তার প্রমাণ দিতে সুপ্রিম কোর্ট থেকে হাইকোর্টে, একাধিক মামলায় জর্জরিত হয়ে ঘুরছেন চাকরি হারানো শিক্ষকরা। সম্প্রতি সেই ‘ঐতিহাসিক’ রায় দেওয়া অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার তাঁর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁদের দাবি, “লাখ লাখ মানুষের জীবন জীবিকা এবং একটা সুস্থ আগামীকে চিরতরে নরকের অন্ধকারে ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন নিজে মিডিয়ার প্রচারের লাইম লাইটে আসার জন্য। আসলে তিনি যতটা আলোর দিশা দেখিয়ে নিজে ভগবান হতে চেয়েছিলেন এই রায়ের পিছনে পর্দার আড়ালে ঠিক ততটাই অন্ধকার ছিল তাঁর উদ্দেশ্য”।
আর এই উদ্দেশ্য যে রাজনৈতিক, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, “যিনি আমাদের বিনা দোষে চাকরি বাতিল করেছিলেন কিছুদিন আগেই নিজেকে বিচারপতির আসন থেকে সরিয়ে রাজনৈতিক দলে যোগদান করেছেন। এখন ৩২ হাজার শিক্ষখ প্রায় দেড় লক্ষ পরিবার সবাই ভাবতে বাধ্য হচ্ছি সবাই রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ৩২ হাজারকে বাতিল করেছিলেন”।
সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিচারেও যে তাঁদের বিরুদ্ধে যে কোনও প্রমাণ মেলেনি তা নিয়েও আক্ষেপ প্রকাশ করা হয়। তাঁরা হতাশার সঙ্গে বলেন, “প্রায় দুবছর দেশের সবথেকে বড় দুটি বড় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করেও ৩২ হাজারের একজনেরও দুর্নীতি খুঁজে পাননি। তা সত্ত্বেও এতটাই দুর্ভাগ্য আমরা আজ বাতিল শিক্ষক”।