এবার বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের ঠিক আগে জনগণের টাকায় সরকারি বিজ্ঞাপন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জনগণের অর্থ অপচয় করা হচ্ছে বিজেপির দলীয় স্বার্থে। ক্ষমতায় আছে বলে কেন্দ্র যা ইচ্ছে তাই করছে। তাই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের অনুরোধ করা হচ্ছে।

রাজ্য সরকারকে ছোট করে দেখানোর জন্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কেন্দ্র বিজ্ঞাপন দিয়ে বিজেপির স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের উচিত বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। নির্দিষ্ট কিছু সরকারের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে।
চিঠিতে তৃণমূল অভিযোগ করেছে, দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যখন কোনও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তখন তার নিরপেক্ষতা বজায় রাখা উচিত। সেটা না করে এই বিজ্ঞাপন নির্দিষ্ট সরকারের পক্ষপাতিত্ব করছে। একই সঙ্গে, বিরোধী সরকারগুলিকে নেতিবাচক দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইনও উল্লেখ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজ্ঞাপনে ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কাজের অগ্রগতি দেখানো হচ্ছে। এবং বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে পিছিয়ে দেখানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বাংলার একাধিক সংবাদপত্রে এ রাজ্যের আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজ নিয়ে তথ্য সহ ঢালাও বিজ্ঞাপন দিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। এমন বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন চোখে আসার পরই ময়দানে নামে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এমন বিজ্ঞাপনকে মোদি সরকারের চূড়ান্ত মিথ্যাচার বলে দাবি করল তৃণমূল।
তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজ্ঞাপন নিয়ে সরব হলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার এই বিজ্ঞাপনে দাবি করেছে যে, তারা নাকি ৪ লক্ষ ৮৯ হাজার বাড়ি অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু টাকা দেবে কে? খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, রাজ্যের ১১ লক্ষ মানুষ, যাঁদের বাড়ি পাওয়ার কথা তাঁদের বঞ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারা বিজ্ঞাপন দিয়ে ফলাও করে বলছে, ৪ লক্ষ ৮৯ হাজার বাড়ির অনুমোদন দিয়েছে। টাকা না দিলে অনুমোদনের অর্থ কী! যে ১১ লক্ষ মানুষের বাড়ির টাকা কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়ার কথা সেই টাকা কোথায় ? এই বিজ্ঞাপনে টাকা নিয়ে কোনও সদুত্তর নেই । এখানেই আমাদের দল স্পষ্টভাবে বলতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমরা আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি এ ধরনের বিজ্ঞাপন না দিয়ে, কথার জাগলারি না করে ত ২০২১-২২, ২০২২-২৩, এবং ২০২৩-২৪ এই তিনটি আর্থিক বছরে আপনারা যে টাকা দিয়েছেন, তার একটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন।”

কুণাল ঘোষ আরও বলেন, “বিজেপি দাবি করছে ৪২ হাজার কোটি টাকা নাকি তারা দিয়েছে। আমরা মনে করিয়ে দিচ্ছি ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, রাজ্য সরকার প্রধানন্ত্রীকে লিখেছে টাকা দিন। কিন্তু তিনটি আর্থিক বছরে একটি টাকাও দেওয়া হয়নি। তাই প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার না করে এই নিয়ে প্রেস বিবৃতি দিন। টাকা লেনদেনের ব্যাংক ডিটেইলস প্রকাশ করুন।
মুখ খোলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেক এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “সর্বভারতীয় বিজেপিকে বলছি, মিথ্যাচার ছড়ানোর জন্য জনগণের টাকা নষ্ট করছেন। আমি বিজেপি নেতৃত্বকে আমার সঙ্গে মুখোমুখি বসে বিতর্কের জন্য চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি ৷ ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনে তাদের পরাজয়ের পর থেকে আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পগুলিতে একটিও পয়সা বরাদ্দ করে থাকলে তার প্রমাণ দিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন৷” বিষয়টি নিয়ে সরব হন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাও। তাঁর কথায়, এ সব করে আসলে রাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরই বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করল তৃণমূল।





































































































































