লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলে কোনওভাবেই আইনি রক্ষাকবচ মিলবে না। এদিন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চ ‘ভোটের বদলে নোট’ মামলায় স্পষ্ট জানিয়েছে, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতেই পারে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। তবে সেক্ষেত্রে কোনও রক্ষাকবচ মিলবে না বলেই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে ঘুষের একটি মামলায় পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সংসদে বক্তব্য রাখা বা ভোট দেওয়ার অভিযোগের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ দেয়। এদিন সেই রায়কে বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সাফ বলেন, “ঘুষ তখনই সম্পূর্ণ হয়, যখন তা গ্রহণ করা হয়। সংবিধানের স্বাধীকার ঘুষকে মান্যতা দেয় না। আমরা সমস্ত দিক পর্যালোচনা করেই পুরনো সিদ্ধান্তকে বাতিল করছি।” পাশাপাশি এদিন দেশের শীর্ষ আদালত পরিষ্কার জানিয়েছে ১৯৯৮ সালের রায় ভারতীয় সংবিধানের ১০৫ এবং ১৯৪ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।

সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়েছে, সংসদ হোক কিংবা বিধানসভা, দেশের আইনপ্রণেতারা ঘুষের অভিযোগ থেকে আর ছাড় পাবেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে আইন মেনে পদক্ষেপ করা যাবে। ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ছাড়াও সাত বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন এস বোপান্না, এমএম সুন্দ্রেশ, পিএস নরসিংহ, জেবি পার্দিওয়ালা, সঞ্জয় কুমার এবং মনোজ মিশ্র। এদিনের মামলায় প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘আইনপ্রণেতাদের দুর্নীতি এবং ঘুষ ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রকে ভেঙে দিচ্ছে।’’ প্রধান বিচারপতি আরও মনে করিয়ে দেন, ‘‘পিভি নরসিংহ রাও মামলার রায়ে এক অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে কোনও আইনপ্রণেতা যিনি ঘুষ নিয়ে ভোট দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয় না, পাশাপাশি যিনি ঘুষ না নিয়ে ভোট দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই অভিযোগ আনা যায়।’’

২০১২ সালে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাংসদ সীতা সোরেনের বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় ভোট দেওয়ার জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তখন সাংসদ সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদে সুরক্ষাকবচ দাবি করেন। ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দিলে, সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। গত বছর এই মামলার শুনানির পর রায় সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল। এ দিন শীর্ষ আদালতে তরফে ১৯৯৮ সালের ওই রায়কে বাতিল করে দেওয়া হল।






































































































































