এবার গঙ্গাভাঙনে গৃহহারা মানুষদের জন্য জমির ব্যবস্থা ও বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। বুধবার মালদহ ও মুর্শিদাবাদের প্রশাসনিক সভা থেকে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাংলার চার রাজ্যে গঙ্গা ছাড়াও একাধিক নদিভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য নতুন প্রকল্পের পরিকল্পনা মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মধ্যেই তৈরি হয়ে গেল। এর আগে উত্তরবঙ্গেই চা বাগানের শ্রমিকদের দুরবস্থা দেখে তাঁদের জন্য জমি থেকে বাড়ি তৈরি পর্যন্ত করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।

মুখ্যমন্ত্রীর দুই দিনাজপুর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ সফরের মধ্যেই এই চার জেলার ভাঙনের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০১৭ সাল থেকে ৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত। ২,৫৭০ কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্টের খতিয়ানও তুলে ধরেন তিনি। এই চারজেলার গঙ্গা-পদ্মা ভাঙনের পাশাপাশি মহানন্দা, ফুলহর, আত্রেয়ী, পুণর্ভবা, টাঙ্গন নদীর ভাঙনে এই ক্ষতি হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি কেন্দ্রকে ভাঙন রোখা নিয়ে রাজ্য পরিকল্পনা পাঠালেও কেন্দ্র তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপই নিচ্ছে না। এমনকি ফরাক্কায় ড্রেজিংয়ের (dredging) কাজও করে না কেন্দ্র। রাজ্য সরকার সামসেরগঞ্জ ও ফরাক্কার ভাঙন এলাকায় মেরামতির জন্য ৫৭ কোটি টাকা দিয়েছে।

উত্তরবঙ্গের এই বিস্তীর্ণ এলাকার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এবার বিশেষ বিভাগে পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। মালদহ ও মুর্শিদাবাদের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী চার জেলার জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন আগামী দশ বছরের মতো পরিকল্পনা করতে। আগামীতে যাদের বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে বা যাদের বাড়ি ইতিমধ্যেই যেতে শুরু করেছে তাদের সমীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। নদী থেকে দূরে সরকারি ভেস্ট ল্যান্ডে (vest land) তাঁদের জমির পাট্টা দেওয়ারও নির্দেশ দেন।

উত্তরবঙ্গে চা শ্রমিকদের তাঁদের কর্মক্ষেত্রের কাছেই সরকারি জমিতে পাট্টা দেওয়ার পাশাপাশি প্রথমে সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দেওয়া হয়। পরে বাড়িও তৈরি করে দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যও সেভাবেই এগোতে চায় রাজ্য সরকার। জেলাশাসকদের ভাঙন এলাকার সার্ভে (survey) ও রিভিউ করে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই স্পেশাল ক্যাটাগরি (special catagory) তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাবও বুধবার পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।





































































































































