সীতাবিহীন রামের মূর্তিতে দাক্ষিণাত্যের বালাজির ছায়া

0
3

রাম আছেন, ভক্ত হনুমান রয়েছেন, কিন্তু সীতা কই? ৫০০ বছরের প্রতিক্ষার পর অযোধ্যার প্রতিষ্ঠিত রাম মন্দির নিয়ে একরাশ প্রশ্নের ভিড়। সীতা ছাড়া রাম! এ আবার হয় নাকি? নাকি শুধুই বিজেপি, আরএসএসের পুরুষতন্ত্রের মতাদর্শকে কায়েম রাখতে মুছে ফেলা হল সীতার অস্তিত্ব। শুধু তাই নয়, আর্য রামের মূর্তি কালো কেন? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত দিয়ে রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠার যে ছবি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়ল তার সঙ্গে দক্ষিণের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি বালাজির আশ্চর্য মিল। একি পরিকল্পিতভাবে ২৪-কে মাথায় রেখে গেরুয়া বিহীন দক্ষিণের ভোট টানার কৌশল?

মানুষের হৃদয়ে বিরাজমান ভগবান রাম আর বিজেপির ‘পেটেন্ট’ নেওয়া ধর্মীয় রাজনীতির রামের ফারাক বরাবরই ছিল। সোমবার রামমন্দিরের উদ্বোধনের পর দেখা গেল ‘রঘুপতি রাঘব সীতারাম’ মন্দিরে ঠাঁই পাননি। সেখানে সীতাকে সরিয়ে জায়গা দেওয়া হয়েছে শুধুই বিজেপি আরএসএসের মতাদর্শগত রামকে। যেখানে সীতার অস্তিত্ব কোনও দিনই ছিল না। মন্দির প্রতিষ্ঠার নামে গেরুয়া শিবিরের এহেন রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতিষ্ঠাকে ভালো চোখে দেখছেন না সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিতর্কের এখানেই শেষ নয়, অযোধ্যায় প্রতিষ্ঠিত রামের রঙ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ উত্তর ভারতের আর্য রামের গায়ের রঙয়ের সঙ্গে এই রামের কোনও মিল নেই। এখানে রামের রঙ কালো। শুধু তাই নয়, অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি বালাজির মূর্তির সঙ্গে আশ্চর্য মিল অযোধ্যার রামের। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বালাজি মডেলের রামমূর্তির মাধ্যমে দক্ষিণের মানুষের ভাবাবেগকে উস্কে দেওয়ার প্রচেষ্টা হয়েছে।

রাজনৈতিক মহলের দাবি, একেবারে পরিকল্পিত ভাবে দাক্ষিণাত্যের ভাবাবেগকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে রাম মন্দিরকে হাতিয়ার করে। আসলে দক্ষিণের রাজ্যে শূন্য হয়ে গিয়েছে বিজেপি। দক্ষিণের একমাত্র রাজ্য কর্ণাটক থেকেও মুছে গিয়েছে বিজেপি। এহেন পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বালাজি মডেলকে তুলে ধরা হয়েছে আর্য রামের ‘কৃষ্ণ’ মূর্তিতে। শুধু তাই নয়, রামে বিগ্রহ নির্মাণের জন্য কৃষ্ণশিলাও গিয়েছিল কর্ণাটকের মাইসুরু জেলার এক গ্রাম থেকে। সব মিলিয়ে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠায় প্রতি পদে পদে ধরা পড়েছে ২৪-এর ভোটের রণনীতি ও বিজেপি-আরএসএসের মতাদর্শ।