সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরামে ঢুকেছে মায়ানমারের ৪২ সেনা-সহ ৫ হাজার নাগরিক

0
4

৪২ জন সেনা অফিসার সহ মায়ানমারের প্রায় পাঁচ হাজার নাগরিক রবিবার রাতে সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশ করেছে ভারতের মিজোরামে। জানা যাচ্ছে, বিদ্রোহী জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’-এর হামলায় একের পর এক এলাকা হাতছাড়া হচ্ছে মায়ানমার সেনার। প্রাণ বাঁচাতে তাই দেশ ছেড়ে ভারতে ঢুকেছে তাঁরা।

মিজোরাম পুলিশের আইজি লালবিয়াকথাঙ্গা খিয়াংটে মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মিজোরামের চাম্পেই জেলা লাগোয়া সীমান্তের অদূরে মায়ানমার সেনার রিখাওদর এবং খাওমাওয়ি ছাউনি দু’টি সোমবার সন্ধ্যায় বিদ্রোহী বাহিনী দখল করে। প্রাণভয়ে ৪২ জন মায়ানমার সেনা জোকাওথান সীমান্ত চেকপোস্ট পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁরা এ দেশে আশ্রয় চেয়েছেন।’’ লালবিয়াকথাঙ্গা জানান, সীমান্তবর্তী একাধিক গ্রামেরও দখল নিয়েছে বিদ্রোহী বাহিনী। তাই মায়ানমারের প্রায় ৫,০০০ গ্রামবাসী আতঙ্কে ভারতে চলে এসেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মায়ানমার সেনা ক্ষমতা দখলের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কার্যত গৃহযুদ্ধ চলছে। সামরিক শাসন বিরোধী বিভিন্ন দল ও সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী মায়ানমারের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর–পশ্চিশাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে প্রায়ই হামলা চালাচ্ছে। মায়ানমারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সীমান্ত এলাকায় চিনের সঙ্গে বাণিজ্য হয় এমন কয়েকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে সামরিক সরকার। চিনা সরকার চলতি সপ্তাহে নিশ্চিত করেছে, মায়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্ত এলাকায় সহিংসতার কারণে চিনা নাগরিক হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

মায়ানমার সেনাবাহিনী পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাপক দমন পীড়ন চালাচ্ছে। নাগরিকদের বড় অংশ সেনা অভিযানে বাস্তুচ্যুত হয়ে গভীর জঙ্গলে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। সেই শরণার্থী শিবির গুলিতেও বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন এন্ড ইভেন্ট ডাটা প্রজেক্টের একটি তথ্য অনুযায়ী, মায়ানমারের দক্ষিণ-পূর্ব রাজ্য কায়াহতে, ২০২৩ সালের প্রথম নয় মাসে ৬০ টি বিমান হামলা চালানো হয়েছিল – যা ২০২২ সালের মোট সংখ্যার পাঁচ গুণেরও বেশি – এবং অন্তত ১১ টি শরণার্থী শিবিরে হামলা হয়েছে যেখানে সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।