মণিপুরে জওয়ানদের ঘিরে ধরল ১২০০ মহিলা!১২ বন্দিকে ছাড়তে বাধ্য হল সেনা

0
3

অশান্তি যেন থামতেই চাইছে না মণিপুরে। শাহের বার্তার কোনও কাজই হল না উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে। উলটে চরম অরাজকতার ছবি ধরা দিল মণিপুরে। এবার আর ১০০, ২০০ নয়। ১২০০ জনের একটি দল সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি ১২ জন ‘বিদ্রোহী’কে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল।যে দলটির নেতৃত্বে ছিলেন মহিলারা। চপের মুখে সকলকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হল সেনারা। শনিবার সকালেই ওই ১২ জনকে আটক করা হয়েছিল। অভিযোগ, তাঁরা মেইতেই জঙ্গিগোষ্ঠী কাঙলেই ইয়ায়ুল কান্না লুপ (কেওয়াইকেএল)-এর সদস্য।

আরও পড়ুন:জ্ব.লছে মণিপুর: শাহের বৈঠকে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর দাবি তৃণমূলের

শনিবার সকাল থেকে স্থানীয় ‘বিদ্রোহী’দের সঙ্গে সেনা জওয়ানদের সংঘর্ষ চলেছে। ১২ জনকে সেনা বন্দি করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু বহু মানুষ একত্রিত হয়ে বন্দিদের মুক্তির দাবি করেন। অন্তত ১২০০ জন ছিলেন ওই দলটিতে। যার নেতৃত্বে ছিলেন মহিলারা। প্রাণহানির সম্ভাবনা এড়াতেই দিনের শেষে নতিস্বীকার করে নেয় সেনা। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘পরিস্থিতি স্পর্শকাতর। তার গুরুত্ব বুঝেই বন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহিলা পরিচালিত বিশাল বিক্ষুব্ধ জনতার বিরুদ্ধে বাহিনী শক্তি প্রয়োগ করলে বহু প্রাণহানি হতে পারত।’’
সেনাবাহিনীর স্পিয়ার কর্পসের তরফে টুইটে জানানো হয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার সকালে পূর্ব ইম্ফলের ইথাম গ্রামে অভিযান চালিয়েছিল সেনাবাহিনী। সাধারণ মানুষের যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য় নির্দিষ্ট কিছু জায়গাতেই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। অভিযানে মোট ১২ জন কেওয়াইকেএল দুষ্কৃতীকে অস্ত্রশস্ত্র সহ আটক করা হয়। তাদের নিয়ে ফিরছিল সেনা, সেই সময়ই ১২০০ থেকে ১৫০০ জনের একটি দুষ্কৃতী দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন মহিলারা, তাঁরা চড়াও হয়। সেনা বাহিনীকে অভিযানে বাধা দেওয়া হয়। তাদের বারবার অনুরোধ করলেও, কিছুতেই পথ ছাড়েনি দুষ্কৃতীরা। প্রাণহানির আশঙ্কায় সেনা সংঘর্ষ এড়ায় এবং আটক ১২ জনকে মুক্তি দিতে বাধ্য় হয়।

সেনার তরফে আরও জানানো হয়েছে, যেহেতু বিপুল সংখ্যক জনতা চড়াও হয়েছিল এবং তাদের কাছে বহু অস্ত্রশস্ত্র ছিল, তাই নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই ১২ জন অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ওই অঞ্চল ছাড়ার আগে সেনা বাহিনী দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে যাবতীয় অস্ত্রশস্ত্র বাজেয়াপ্ত করে। ফের একবার মণিপুরে শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে অনুরোধও জানানো হয়েছে।
মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বিক্ষোভে মহিলাদের ভূমিকা চোখে পড়ার মত। এর আগে মহিলাদের প্রতিরোধের মুখে কখনও আটকা পড়েছে সেনাবাহিনীর গাড়ি, কখনও ফিরে আসতে হয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দলকে। দিন কয়েক আগেই সেনার গাড়ির সামনে কয়েকশো মহিলা বসে পড়ে তাদের আটকে দিয়েছেন । অস্ত্র লুটের তদন্তে যাওয়া সিবিআইয়ের দলকে একই ভাবে মণিপুর পুলিশ ট্রেনিং কলেজে ঢুকতে দেননি প্রায় দু’হাজার মহিলা। এ বার সেনাকে ঘিরে তাদের হাত থেকে বন্দিদের ছাড়িয়ে আনলেন সেই মহিলারাই।