ভাঁড়ারে প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। আর সেই অর্থের জোগান মেটাতে পুজোর আগেই কলকাতা পুরসভার বন্ড আসছে বাজারে।অবাক হচ্ছেন? নামও ঠিক হয়ে গিয়েছে, “কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন বন্ড।” উন্নয়নের অর্থ বাজার থেকে তুলতেই বন্ড ছাড়বে কলকাতা পুরসভা।জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে গাঁটছড়া বেধেই চলবে বন্ডের প্রক্রিয়া। তিন ধাপে ৩৫০ কোটি টাকা করে মোট ১০৫০টাকার বন্ড ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নূন্যতম হাজার টাকায় মিলবে কলকাতা পুরসভার বন্ড। রাজ্যের অর্থ দফতরের সবুজ সংকেত পেলেই কাজ শুরু করে দিতে চায় কলকাতা পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই এই বন্ড বাজারে ছাড়া হতে পারে। কেমন সাড়া মেলে তার উপর নির্ভর করে আরও বন্ড বাজারে ছাড়বে কলকাতা পুরসভা। তবে পুরোটাই নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতির উপর।জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার এই বিষয়ে কোনও অভিজ্ঞতা না থাকায় দেশের অন্যতম বড় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে গাটছড়া বেধে এগোতে চাইছে। ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ‘ক্যাপিটাল মার্কেট’ শাখাকে উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করার আলোচনাও হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে।সিদ্ধান্ত হয়েছে বন্ড ঘোষণা থেকে শুরু করে টাকা তোলা, এমনকী গ্রাহকের রিটার্ন—সবটাই দেখভাল করবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু কেন এই বন্ড আনতে চলেছে কলকাতা পুরসভা? জানা গিয়েছে, করোনার সময় থেকেই কলকাতা পুরসভার ভাঁড়েরে টান।সম্পত্তি করের অনেকটাই বাকি পড়ে আছে বাজারে। অন্য সমস্ত করে জোর দিলেও আয় তেমন বাড়েনি। তাই এবার উন্নয়নের অর্থ জোগাড়ে বাজার থেকে টাকা তুলতে চাইছে কলকাতা পুরসভা।
অর্থনৈতিক বাজার বিশেষজ্ঞদের মত, এই ধরনের বন্ড বাজারে ছাড়তে গেলে ক্রেডিট রেটিংয়ের প্রয়োজন হয়। তাই কলকাতা সহ রাজ্যের ছ’টি পুরসভার ক্রেডিট রেটিং করানো হয়েছে। চলতি বছর এপ্রিল মাসে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি (ক্রিসিল) রিপোর্ট দিয়েছে। তাতে কলকাতা পুরসভার র্যাঙ্কিং চারে।
ইতিমধ্যে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে দু’টি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। একটি বন্ড বাজারে নিয়ে আসা সংক্রান্ত এবং অন্যটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংস্থার নিয়োগ সম্পর্কিত। রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর কয়েকটি বিষয়ে ব্যাখ্যাও চেয়েছে। অর্থ দফতর কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। গত ১০ বছরে পুরসভার আয়ের খতিয়ান, আগামী ১০ বছরে আয়বৃদ্ধির পরিকল্পনা, কীভাবে এই বন্ডের রিটার্ন দেওয়া হবে, সেই উত্তরও পাঠিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এখন রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেত পেলেই বন্ড ছাড়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।শুধুমাত্র তাই নয়, কোনও স্বয়ংশাসিত সংস্থাকে এই ধরনের বন্ড বাজারে ছাড়তে গেলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এবং সেবির অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেই অনুমোদন পাওয়ার জন্য প্রস্তুত কলকাতা পুরসভা। পাঁচ বা সাত বছরের দীর্ঘমেয়াদি বন্ড ছাড়া হবে। ১০০০ টাকার কম দরেও বন্ড মিলবে।