দুপুর তখন পৌনে তিনটে। মঙ্গলবার আচমকাই মেডিক্যাল কলেজের এসএসবি বিল্ডিংয়ের দোতলার সার্ভার ও তিনতলার সেন্ট্রাল সার্ভারে আগুন লাগে। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা ভবন। আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তাই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। অথচ অপারেশন টেবিলে রোগীর জটিল অস্ত্রোপচার চলছে। সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি কর্তব্যরত ডাক্তাররা। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই দোতলার ওটি রুমে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে জটিল কিডনির অপারেশন শেষ করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। এক বিরল ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ।
আরও পড়ুন:‘মোদি’ পদবি মামলায় গুজরাট হাইকোর্টে আবেদন রাহুলের! শীঘ্রই শুনানি
মেডিক্যালের এসএসবি বিল্ডিংয়ের দোতলার সার্ভার ও তিনতলার সেন্ট্রাল সার্ভারে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের জেরে কালো ধোঁয়ায় ঢেকেছে চারপাশ। অন্ধকারে ঢেকে যায় একতলা ও দোতলা। আলো চলে যায় অপারেশন রুমেও।

পোড়া গন্ধও নাকে আসে সকলের। সেই সময় অপারেশন চলছিল ৪৬ বছরের ছায়া ঘোষের। ৬-৭ সেন্টিমিটারের টিউমার মহিলার কিডনির ডানদিক থেকে বের করছিলেন ইউরোলজির চিকিৎসকরা। আচমকা আলো চলে যাওয়ায় বিপদে পড়ে যান ডাক্তাররা।
বিদ্যুৎহীন হাসপাতালের অপারেশন প্রসঙ্গে হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, অপারেশন বন্ধ করা সম্ভব ছিল না। কারণ অস্ত্রোপচারও তখন মাঝপথে। টিউমারের অবস্থান এমন ছিল যে অপারেশন বন্ধ করলেই রক্তক্ষরণ শুরু হত। যে পরিস্থিতিতে এবং যেভাবে কর্তব্যে অটল থেকে ডাক্তাররা সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার ভূয়সী প্রশংসাও করেন অধ্যক্ষ।

ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সুনির্মল চৌধুরী ও তাঁর টিম অস্ত্রোপচার করেছেন।ডাক্তার চৌধুরী জানান, অপারেশন বন্ধ করলে রোগীর প্রাণ সংশয় হতে পারত। বাইরে থেকে কেউ কেউ সতর্ক করে বলেন অপারেশন থিয়েটারেও আগুন চলে আসতে পারে। কিন্তু সকলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অস্ত্রোপচার শেষ করেই বেরনো হবে। অপারেশন সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তারবাবু। এই অস্ত্রোপচারে তাঁর সঙ্গে ছিলেন ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. গৌরব কুন্ডু, ডা. শুভম সিনহা, ডা. জগমোহন, ডা. শাহাবাজ, ডা. প্রখর পটেল এবং অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের ডা. অঞ্জনা ঘোষ দস্তিদার এবং ডা. দেবাশিস ঘোষ।










































































































































