স্থান : কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট
সময় : শুক্রবার,সন্ধ্যা।
উপলক্ষ : আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনের বছরের বেস্ট অনুষ্ঠান।
রাজনীতির জগত থেকে শিল্প-সংস্কৃতি জগতের অনেকেরই উজ্জ্বল উপস্থিতি। কিন্তু তার মাঝে স্পট লাইট গিয়ে পড়ল দু’জনের মুখের উপর। একজন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, অন্যজন সাংবাদিক, লেখক এবং তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। আদালতে একজনের নির্দেশ আর অবজার্ভেশন নিয়ে শত আলোচনা। অন্যজন ব্যতিক্রমী
ভঙ্গিতে বিচারপতির সমালোচনায় মুখর। দ্বৈরথ মাঝে মধ্যেই খবরের শিরোনাম, সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে নানা কথা। দুই বিতর্কিত ইদের পূর্ববর্তী সন্ধ্যায় মুখোমুখি।
হাতে হাত রাখতেই ফ্ল্যাশ বালবের ঝলকানি, মোবাইলে পরপর স্ন্যাপ। পাশে এসে বিচারপতি দাঁড়াতেই সৌজন্যে উঠে দাঁড়ালেন কুণাল। হাতে হাত। চকিতে বিচারপতির প্রশ্ন, কী হল, আজ আমার বিরুদ্ধে কিছু বলেছেন নাকি? কুণালও ততোধিক স্বপ্রতিভ ভঙ্গিতে বলে ওঠেন, না-না, আপনি তো আজ মামলার বাইরে দলের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি! দু’জনের মুখেই তখন প্রাঞ্জল হাসি। সাংবাদিক মহল সব ভুলে তখন সে দিকে তাকিয়ে। খবরের সন্ধানে। কথা এগোচ্ছে। বিচারপতি বলছেন, আপনার বিবৃতিগুলো রোজ শুনি আর দেখি। দারুন বলেন আপনি। পালটা হেসে কুণালের জবাব, আমরাও আপনার মামলাগুলোর উপর নজর রাখি। দলের বিরুদ্ধে আপনার মন্তব্য এলেই আক্রমণ শানাই। পায়ের অস্ত্রোপচার সেরে সবে ঘরের বাইরে পা রেখেছেন কুণাল। সে কথা মাথায় রেখেই প্রথম সারির কোণায় বসেছিলেন। ফলে অনুষ্ঠানের মাঝপথে বিচারপতি বেরোবার মুখে ফের মুখোমুখি।
আবার দাঁড়িয়ে পড়লেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার কুণালের প্রশ্ন, কী হলো মাঝপথে? জবাবে বিচারপতি, কোর্টের একটা বিশেষ কাজে যাচ্ছি। একটা অর্ডার দিতে হবে। আপনার আবার কাজ বেড়ে যাবে। পালটা জবাব কুণালেরও- তাহলে তো তৈরি থাকতে হচ্ছে।
এরপর হাসি, পারস্পরিক সৌজন্য, বিচারপতির প্রস্থান এবং গুণিজনের মধ্যে হাজার প্রশ্ন। যে কথা শোনা গেল না, সে নিয়ে কী বললেন কুণাল? প্রেস কনফারেন্স করার ভঙ্গিতে জবাব, সৌজন্য আলাপ হয়েছে। কথাও হয়েছে। কিন্তু বলার নয়।
বিচারপতি-কুণালের কথার সাক্ষী এক আমলা বললেন, বিবৃতি যুদ্ধের বাতাবরণে এমন সৌজন্য-সংলাপ চলতে থাকুক। কাজের বাইরে সামাজিক জীবনে এমন সৌজন্য সব ক্ষেত্রেই থাকুক। উদ্যোক্তারা ধন্যবাদ দাবি করতেই পারেন।
অনুষ্ঠানের আপ্যায়নে ছিলেন সংস্থার প্রধান সম্পাদক অভীক সরকার। এবং অবশ্যই ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অনিন্দ্য জানা ও সহকর্মীরা। অনিন্দ্য লেখনীতে শুধু সুচারু শব্দবিন্যাসে পটু তাই নয়, বক্তব্যের শব্দচয়নও ছিল শ্রুতিমধুর। সঙ্গে সোহিনীও যথার্থ।বছরের বেস্ট সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে সম্মানিত হলেন বিশ্বভারতীর গবেষক থেকে বিশ্বজয়ী মহিলা ক্রিকেট দলের সদস্য তিতাস সাধু, প্রস্থেটিক বিশেষজ্ঞ সোমনাথ কুণ্ডু থেকে শুরু করে বাংলাদেশের বিতর্কিত অভিনেত্রী পরিমণি। ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া, সত্যম রায়চৌধুরী, বন্ধন ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ঘোষ, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কোয়েল মল্লিক, সুকান্ত মজুমদার, লকেট চট্টোপাধ্যায়, মহম্মদ সেলিম, সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, শ্রীজাত, প্রচেত গুপ্ত, শোভন-বৈশাখী, সংগীতশিল্পী অনুপম রায়, জিতু কমল, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, শুভাপ্রসন্ন প্রমুখ।
জয় হো ও নাটু নাটু গান মিশিয়ে বাঙালি জাগো শীর্ষক ফিউশন মঞ্চে উপস্থাপনা করলেন রূপম ইসলাম। অনুষ্ঠান থেকেই জানা গেল, আমেরিকায় সরষের তেলের ব্যবহার নিষিদ্ধ। সেখানকার ভারতীয় রেস্তোরাঁয় শেফের কাজ করা রনি মজুমদার পুরস্কৃত হলেন।
তিনিই জানালেন, বাইডেনের দেশে সরষের তেলের ব্যবহার নিষিদ্ধ। কিন্তু তাঁরা রাঁধেন সরষের তেল দিয়েই! আর তা খেয়ে নাকি আহ্লাদিত আমেরিকাবাসী।




































































































































