শান্ত রিষড়াকে (Rishra) ফের অশান্ত করার চেষ্টা বিজেপির (BJP)। সোমবার এমনই অভিযোগ করলেন শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্ত রায় (Sudipto Roy)। সোমবার সকাল থেকেই পুলিশের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে রিষড়ার পরিস্থিতি। তবে সময় যত গড়িয়েছে বিজেপির উস্কানিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রিষড়া। আর রবিবার অশান্তির পর পরিস্থিতি যখন ধীরেধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে ঠিক সেই সময়ই নতুন করে অশান্তির জন্য রিষড়ায় যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। তবে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও কেন সুকান্ত সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলেন তা নিয়েই উঠছে বিস্তর প্রশ্ন। উল্লেখ্য, রবিবারই রামনবমীর (Ramnavami) মিছিলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রিষড়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রবিবার রাত থেকেই পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। কিন্তু তারপরেও সোমবার সকালে রিষড়ায় যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি। আর স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ এলাকায় ঢুকতে বাধা দেয় সুকান্ত মজুমদারকে। আর তাতেই চটে লাল বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
সূত্রের খবর, এদিন রিষড়া যাওয়ার পথে জিটি রোডের (GT Road) বিশালাক্ষীতলায় পুলিশ আটকে দেয় সুকান্তর কনভয়। আর তার জেরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পুলিশের সঙ্গে জোর করে রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু করে বিজেপি কর্মীরা। রাস্তা থেকে পুলিশের ব্যারিকেড তুলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এরপরই পুলিশের সঙ্গে না পেরে রাস্তায় বসেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সুকান্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে শ্রীরামপুর থেকে মাহেশ হয়ে রিষড়া যাওয়ার পথে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে জিটি রোডে নাকা চেকিং চলছে। প্রতিটি গাড়ি, বাইক নাকা চেকিং করে তবেই রিষড়ার দিকে পাঠানো হচ্ছে। যাতে আর কোন রকম কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফ থেকে। আর তার মধ্যেই নতুন করে অশান্তি বাধানোর চেষ্টায় জোর করে রিষড়ায় যেতে চান সুকান্ত। তবে এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতির গা জোয়ারির বিরুদ্ধে সর্ব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি সাফ জানিয়েছেন, ১৪৪ ধারা জারির পরেও কেন সেখানে যাচ্ছেন বিজেপি নেতারা? এর থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে রিষড়ায় নতুন করে অশান্তির চেষ্টা করছে বিজেপি। অন্যদিকে জয়প্রকাশ বলেন, বাংলাকে কখনোই কাশ্মীর হতে দেওয়া যাবে না। বিজেপি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে রাজ্যে অশান্তির চেষ্টা করছে।
তবে ১৪৪ ধারা জারির পর কীভাবে সেখানে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হতে পারে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে পুলিশ। ঘটনার জেরে চরম দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। পাশাপাশি বেশ কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জি টি রোড। এদিকে রবিবারের অশান্তির পরই রাত দশটা থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে এলাকায়। রিষড়া ও মাহেশে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। আর এই পরিস্থিতিতেই পুলিশি বাধার মুখে পড়েন সুকান্ত মজুমদার।
তবে এদিন পুলিশের উপর রেগে গিয়ে সুকান্ত মজুমদারের দাবি, গ্রেফতার হবেন উত্তরপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। তবে কিভাবে তিনি কোনো প্রমাণ ছাড়া এভাবে একজন তৃণমূল নেতার আগাম গ্রেফতার এর কথা বলছে এই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এদিন তিনি বলেন উত্তরপাড়া পুরসভায় প্রচুর নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে এবার গ্রেফতার হবে দিলীপ যাদব। টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে পুরসভায়। এই বিষয়ে অবশ্য দিলীপ যাদব বলেন,সুকান্ত মজুমদার যে অভিযোগ করেছেন আগে সেটা তিনি প্রমাণ করুক। সুকান্ত রাজনীতিতে নতুন তাই প্রমাণ ছাড়া এসব বলছেন। এছাড়াও দিলীপ যাদব বলেন গত চল্লিশ বছর ধরে তিনি মানুষের সাথে রাজনীতি করছেন সেখানে সুকান্ত মজুমদার অনেক নতুন। সুকান্ত মজুমদারের রাজনৈতিক পরিপক্কতা নেই।