মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলা যেভাবে উন্নয়নের শিখরে উঠেছে ঠিক সেভাবেই এগিয়ে যাবে মেঘালয়। বাংলার মতোই এখানে চালু হবে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প। এই বার্তা আগেই দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের(TMC) তরফে। বুধবার তুরা বাজারে তৃণমূলের জনসভায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abisekh Banerjee) ঘোষণা করে দিলেন, “ঠিক যেভাবে বাংলায় সরকার গড়ার পর প্রথম ক্যাবিনেট মিটিংয়ে চালু হয়েছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, একইভাবে মেঘালয়েও(Meghalaya) তৃণমূল সরকার গড়লে প্রথম ক্যাবিনেট মিটিংয়ে চালু হবে উইকার্ড(We Card)। যার মাধ্যমে এখানকার মহিলারা মাসিক ১ হাজার টাকা ও বার্ষিক ১২ হাজার টাকা পাবে। শুধু তাই নয়, সরকার গড়ার প্রথম ৩ মাসের মধ্যে ইস্তেহারের ১০ প্রতিশ্রুতি পূরণ করব আমরা।”
বুধবার তুরার জনসভা থেকে বিজেপি ও এনপিপির পুতুল সরকারকে তোপ দাগার পাশাপাশি মেঘালয়ের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে একজন যোগ্য নেতার পক্ষে সাওয়াল করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেন, মেঘালয়বাসীর এমন একজন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়োজন যিনি এখানকার মানুষের পক্ষে সওয়াল করবেন। দিল্লি থেকে নিজের অধিকার ছিনিয়ে আনবেন। দিল্লি ও আসামের পুতুল হয়ে থাকা কোনও নেতাকে মেঘালয়বাসী চান না।” এর পাশাপাশি মেঘালয়ের জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে অভিষেক বলেন, “মেঘালয়-আসাম সীমান্তে আসাম পুলিশের গুলিতে এখানকার ৫ জনের মৃত্যু হল, এতদিনেও তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিয়েছে মেঘালয় সরকার। একটা নোটিস পর্যন্ত পাঠানো হয়নি তদন্ততো দূরের কথা। পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি কারণ কনরাড নোটিস পাঠালে ইডির নোটিস আসবে। সেক্ষেত্রে নিজের দুর্নীতি ও টাকা বাঁচাতে সমস্যা হবে। তাই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কেন মেঘালয়কে দিল্লির কাছে নত হতে হবে? কেন আসামের কাছে নত হতে হবে?”
এরপর বাংলার উদাহরণ টেনে অভিষেক বলেন, “বাংলায় একাধিক রাজ্যের বোর্ডার রয়েছে কিন্তু কারও সাহস নেই এই ধরনের কাজ করার। কারণ ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি তৃণমূল সরকার গড়ার ১ মাসের মধ্যে গুলি চালানোর ঘটনায় যে অফিসার যুক্ত ছিল তার মাথার উপর যে মন্ত্রীর হাত থাক, ১ মাসের মধ্যে পাতাল থেকে তাঁকে টেনে এনে জেলে পুরব।” এর পাশাপাশি বিজেপি-এনপিপির জোট সরকারে মেঘালয়ে অনুন্নয়ের তালিকা তুলে ধরে অভিষেক আরও বলে, “যে মুখ্যমন্ত্রী নিজের কেন্দ্রে বিদ্যুৎ আনতে পারেনি সে মেঘালয়ের উন্নয়ন কীভাবে করবে? গোটা রাজ্যে অনুন্নয়ন। হাসপাতাল, কলেজ সমস্ত জায়গায় অনুন্নয়ন, একটাও মেডিক্যাল কলেজ নেই এখানে। বেকারদের চাকরি নেই, হাসপাতালে ডাক্তার নেই, স্কুল কলেজে শিক্ষক নেই, রাস্তা-ঘাট নেই এটাই এই সরকারের অবদান। একদিনও রাজ্যের দাবি দাওয়া নিয়ে দিল্লির দরবার করতে দেখা যায়নি এখানকার মুখ্যমন্ত্রীকে।”
এরপরই তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে অভিষেক বলেন, “২৭ তারিখ সময় আপনাদের ভবিষ্যৎ গড়ার। আপনার একটি ভোট এই সরকারকে উৎখাত করবে। এবং মেঘালয়ের অধিকার দিল্লির থেকে ছিনিয়ে আনবে। এমন একটা দলকে আনুন যে আপনাদের বিশ্বাস ভাংবে না। টাকার কাছে বিক্রি হবে না। দিল্লির রক্তচক্ষুর কাছে মাথা নত করবে না। ঘাসফুলের বোতাম চাপার মানে আপনাদের উন্নয়নের সুইচ টেপা। সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেওয়া। বিজেপি-এনপিপিকে উৎখাত করে মেঘালয়ের কতখানি ক্ষমতা তা আমরা ওদের দেখিয়ে দেব।”