শুভেন্দুর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে তৃণমূল, বেপাত্তা উদ্যোক্তা জিতেন তিওয়ারি

0
2

আসানসোলে দলবদলু বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে চরম বিশৃঙ্খলা। পদপিষ্ট হয়ে এক নাবালিকা সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় কমপক্ষে ৭ গুরুতর জখম। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম চাঁদমণি দেবী (৫০), ঝালি বাউরি (৫৫) ও প্রীতি সিং (১৩)। আর এই ঘটনার পর থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জিতেন তিওয়ারিকে। তিনি ফোন ধরছেন না। কার্যত নিরুদ্দেশ আসানসোল এলাকার এই দলবদলু বিজেপি নেতা। কিন্তু তিনি কোনওভাবেই এই মর্মান্তিক ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। যেমন দায় এড়াতে পারেন না আরেক দলবদলু বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। গতকাল, বুধবার বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি তাঁর স্ত্রীর নির্বাচিত ওয়ার্ড রামকৃষ্ণ ডাঙালে শিবচর্চা নামে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানেই হাজির ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

আরও পড়ুন:‘বিচার চাই’! শুভেন্দুর কম্বল বিতরণী অনুষ্ঠানে মাকে হারিয়ে দাবি শোকার্ত ছেলের

অভিযোগ, শিল্পাঞ্চলে শক্তি প্রদর্শন করতে দলবদলু জিতেন্দ্র কম্বল দেওয়ার টোপ দিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক জমায়েত করেন। বিভিন্ন এলাকায় টোকেনও বিতরণ করা হয়। কম্বল পাওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসানসোল পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে রামকৃষ্ণ ডাঙাল সরকারি স্কুলের বিপরীত মাঠে জমায়েত হন। বিজেপি নেতারা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মাথায় তিলক কেটে এলাকা ছাড়তেই কম্বল বিতরণ নিয়ে শুরু হয় হুড়োহুড়ি। মানুষের চাপে ভেঙে যায় ব্যারিকেড। একে অন্যের ঘাড়ে গিয়ে পড়ে মানুষ। সেখানে বহু মানুষ পদপিষ্ট হয়ে যান। গোটা এলাকায় চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাতেই ঘটে যায় বড় অঘটন। জখমদের আসানসোল জেলা হাসপাতাল ও একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন। জখম পাঁচজনকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে আসানসোল ডিএম অফিসের অদূরে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় নাবালিকা প্রীতিকে। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

যদিও এত বড় মর্মান্তিক ঘটনার পরেও আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেখা যায়নি বিজেপির কোনও নেতাকে। পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান। তৃণমূল নেতারা জখমদের খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। হাসপাতালে এসে আহতদের চিকিৎসার তত্ত্বাবধান করেন স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি অনিমেষ দাস, আইএনটিটিউসির জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক, আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়।

মর্মান্তিক এই ঘটনার পর আসানসোলের পুলিশ কমিশনার সুধীরকুমার নীলকান্তম বলেন, অনুষ্ঠানে কোনও পুলিশি অনুমতি নেওয়া হয়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে।