মণীশ কীর্তনীয়া, নয়াদিল্লি
G-20-র প্রস্তুতি বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ডাকে উপস্থিত দেশের তামাম রাজনৈতিক দলের প্রধানরা। আর সেখানেই তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, নীতি নিয়ে লড়াই জারি থাকলেও দেশের স্বার্থে একযোগে কাজ করবেন। মমতার মতে, পেট্রোল-ডিজেল, রান্নার গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, যুক্তরাষ্ট্র কাঠামোয় আঘাত-সহ একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদি সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য, নীতিগত লড়াই ছিল, আছে, থাকবে। কিন্তু দেশ সবার আগে। সেই কারণে দেশের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)।
এই বৈঠকে মমতা পরিষ্কার বার্তা দেন, তিনি দেশ ও দেশের সম্মানকে সবার রাখেন। ক্ষুদ্র রাজনীতির অনেক ঊর্ধ্বে। তৃণমূল সুপ্রিমোর সুরে সুর মেলায় বাম-কংগ্রেস।
এদিন রাষ্ট্রপতি ভবনের সাংস্কৃতিক হলে জি-২০ বৈঠকে যোগ দেন মমতা। প্রায় ৪০টি রাজনৈতিক দলের প্রধানরা ছিলেন এই বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মোট ১৫ জন বক্তব্য রাখেন। নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমকে স্ট্যালিন, সীতারাম ইয়েচুরি, মল্লিকার্জুন খাড়্গে, এইচডি দেবগৌড়া, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, চন্দ্রবাবু নাইডু। ২০২৩-এর সেপ্টেম্বরে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন হবে দিল্লিতে। তার আগে কলকাতা-সহ গোটা দেশের ৫৫টি জায়গায় ২০০টি জি-২০ বৈঠক হবে। দেশের পাশাপাশি যেসব রাজ্যে জি-২০ বৈঠক হবে সেখানকার কৃষ্টি-সংস্কৃতি-খাদ্যাভাস-পর্যটন-হেরিটেজ সহ একাধিক বিষয় তুলে ধরা হবে দেশ-বিদেশের অতিথি-অভ্যাগতদের কাছে। ফলে দেশের সম্মানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মান-মর্যাদাও জড়িয়ে। তাই প্রতিটি রাজ্যই চাইবে তার নিজের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে। এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চিত ভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।
মঙ্গলবার রাজস্থান যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজস্থানের আজমেঢ় এবং পুষ্করে যাবেন তিনি। পুষ্করের ব্রহ্ম মন্দিরে পুজোও দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। যাবেন আজমেঢ় শরিফ দরগাতেও। মঙ্গলবার রাতেই ফের দিল্লিতে ফিরে যাবেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি মঙ্গলবার আজমেঢ় শরিফ এবং পুষ্করে যাব। আমার মনে আছে, যখন আমি রেলমন্ত্রী ছিলাম, তখন এই দু’টি প্রোজেক্ট পাশ করিয়েছিলাম। আমার দিকে আঙুল তোলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এটা সাম্প্রদায়িক পদক্ষেপ। কিন্তু, হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের জন্যই এই প্রোজেক্ট ছিল। স্বপ্নের প্রোজেক্ট ছিল আমার। মঙ্গলবার আমার কোনও কর্মসূচি নেই। আমি তো রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য সেভাবে কোথাও যেতে পারি না। তাই এবার সুযোগ পেয়েছি, ঘুরে আসব।”
তবে ৬ ডিসেম্বরের একটি রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে।১৯৯২ সালের এই দিনে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল। ওইদিনকে স্মরণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সংহতি দিবস পালন করে তৃণমূল। এবছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। ফলে সেই ৬ ডিসেম্বরেই একদিকে আজমেঢ় শরিফ, অন্যদিকে পুষ্করের ব্রহ্ম মন্দিরে পুজো দেবেন মমতা। বাংলা তথা সারা দেশের জন্যই শান্তি ও সম্প্রীতির প্রার্থনা করবেন তিনি।












































































































































