নিষিদ্ধ পল্লি থেকে মানবাধিকার কমিশন, উত্তরণের গল্প লিখলেন নাসিমা

0
3

জীবনটা রূপকথা (fairy tale) নয়, প্রতি মুহূর্তে উত্থান পতন লেগেই থাকে। অন্ধকার যখন ঘিরে ধরে তখন লড়াই করে আলোর পথ খুঁজে পাওয়া সহজ হয় না। কিন্তু কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন পতি*তা পল্লির (Red light area) এক যুবতী, নাম নাসিমা খাতুন (Nasima Khatun)। তিনি জায়গা করে নিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (National Human Rights Committee) উপদেষ্টা মণ্ডলীতে।

নিষিদ্ধ পল্লি নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে একাধিক লড়াইয়ের গল্প। এখানে যারা থাকেন সমাজের চোখে তাদের কোনও সম্মান নেই। অথচ একসময় তাদের দুচোখেও অনেক স্বপ্ন ছিল। মা পারিনি কিন্তু মেয়ে পেরেছে। বিহারের (Bihar) মুজফফরপুরের চতুর্ভুজে জন্ম এই নাসিমা খাতুনের। এক যৌ*নকর্মী তাঁকে দত্তক নেন। সেই থেকেই বদলে যায় জীবন। তারপর একের পর এক লড়াই করে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা। জীবনে আচমকাই আলোর প্রবেশ। ১৯৯৫ সালে আইএএস অফিসার রাজবালা ভার্মা (Rajbala Varma) যৌ*নকর্মীদের জন্য একটি সমাজসেবামূলক প্রকল্প শুরু করেন। ‘বেটার লাইফ অপশন’ (Better Life Option) শীর্ষক সেই প্রকল্পের সূত্রেই নাসিমা সেলাই করে উপার্জন করা শুরু করেন। তখন মাসিক রোজগার ছিল ৫০০ টাকা। পতিতা পল্লীর পরিবেশে জীবন কাটানো সহজ নয়, তবুও আস্থা হারাননি নাসিমা। অন্ত্যজ শ্রেণির প্রতিনিধি হয়ে। জাতীয় মানবাধিকার ( National Human Rights) কমিশনের নয়া উপদেষ্টা মণ্ডলীতে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সমাজসেবামূলক কাজ তিনি আগেই শুরু করেন।তাঁর কথায় অসহায় মেয়েদের নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে হবে। আর সেই লড়াইটা করতে মানবাধিকার কমিশনের দরকার। নাসিমা বলছেন, নিজেদের কণ্ঠস্বর সবার মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজন আছে। আর তাই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের একটি কমিটিতে জায়গা পাওয়ার পর এখন সমাজের অসহায় মেয়েদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাঁর লক্ষ্য। তিনি বলছেন প্রতিটি রাজ্যে অসংখ্য পতিতালয় রয়েছে, কিন্তু সেখানে থাকা মেয়েদের শিক্ষা ও অন্যান্য অধিকারের জন্য লড়াই করার কেউ নেই। এবার সেই কাজটাই করতে চান নাসিমা খাতুন।