নেতাজি ইন্ডোরের (Netaji Indore Stadium) মহাসমাবেশ থেকে এদিন দলের সমস্ত নেতা-কর্মীদের আগামীর দিকনির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) খোঁজ নিলেন বর্ষীয়ান নেতা মদন মিত্রের (Madan Mitra)। এদিন মঞ্চে উঠে প্রথমেই কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের খোঁজ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, “আমি ভাবছিলাম এসে দেখব, মদন এসেছে কি-না। তা আমি ওকে খোঁজার আগেই দেখলাম ও নিজেই হাত দেখাল।” কিন্তু এতবড় সাংগঠনিক সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে শুরুতেই সুপ্রিমো কেন মদন মিত্রের খোঁজ নিলেন? বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়ে যায়। তাহলে কি দলনেত্রীর কানে মদন সম্পর্কে কোনও খবর ছিল?
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুরুর দিনের সঙ্গী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা ও কামারহাটির বিধায়ক মদন এদিন এমন এমন কিছু মন্তব্য করেন, যেখানে তাঁর রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার জল্পনা উসকে যায়। কী মন্তব্য করেছিলেন মদন? এদিন তিনি বলেন, “আপাতত ২০২৬ পর্যন্ত বিধায়ক আছি। তারপর নতুন করে ভাবতে হবে। আমার মতো সকলকেই ভাবতে হবে। ভাবতে হবে এই বয়সে আর ভোটে দাঁড়ানো উচিত কিনা। আমার থেকে ভাল আর কেউ আছে কিনা। আমি বিধানসভায় গিয়ে অনেককেই বলতে শুনেছি উনি ১১ বারের বিধায়ক। আমার খারাপ লাগে। সেটা না করে ছেলে, নাতি এদের সুযোগ দিলে ভাল হত। আমার খেলা দেখে নতুন প্রজন্ম শিখবে। তাই নিজেকে নিজের মতো গুটিয়ে নিয়েছি। যা না পাওয়ার ছিল সেটা না পাওয়াই থাক।” যদিও রাজনীতি থেকে তিনি অবসর নিচ্ছেন কিনা, সেটা নিয়ে বিস্তর ধোঁয়াশা রয়েছে।
অন্যদিকে, এদিন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে কিছুটা “ধমক” দেন তৃণমূল নেত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে মহুয়ার একাধিক আপত্তিকর মন্তব্যর জন্য বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দল বিড়ম্বনায় পড়েছে। যা একেবারেই ভালোভাবে নেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। পঞ্চায়েত ভোটের লক্ষ্যে এবং পুজোর আগে নেতা-কর্মীদের নতুন করে উজ্জীবিত করতে দলীয় অনুশাসন ও শৃঙ্খলা নিয়ে নেতাজি ইন্ডোরে বৃহস্পতিবার দলের সাংগঠনিক সভায় বক্তব্য রাখার সময় মহুয়া মৈত্রর উদ্দেশ্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত ধমকের সুরে বলেন, “করিমপুর আর মহুয়ার জায়গা নেই। ওটা আবু তাহেরের জায়গা। উনি দেখে নেবেন। তুমি তোমার জায়গাটা নিয়ে থাকো।”
উল্লেখ্য, ২০১৯ লোকসভা ভোটে নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূল প্রার্থী হন মহুয়া মৈত্র। বড় ব্যবধানে জিতেও যান তিনি। তার আগে করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন মহুয়া। নদিয়া জেলার মধ্যে হলেও করিমপুর আদপে মুর্শিদাবাদ লোকসভার অন্তর্গত একটি বিধানসভা ক্ষেত্র। ফলে বর্তমানে ওই এলাকা একবারেই মহুয়া মৈত্রর আওতার মধ্যে পড়ে না। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, এখনও করিমপুরে নিজের মতো রাজনীতি করছেন মহুয়া। এটাই ভালোভাবে নেননি দলনেত্রী।