অভাবের সংসারে দুবেলা দুমুঠো জোগাড় করা কষ্টসাধ্য। কোনও দিন আধপেটা খাওয়া আবার কোনও দিন সারাক্ষণ না খেয়ে কাটান। কিন্তু ইচ্ছে শক্তির কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে আর্থিক অভাব(Financial crisis)। তাই সব রকমের প্রতিকূলতাকে জয় করে স্বপ্নের সোপানে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হলেন শ্যামপুরের (Shyampur) যমজ ভাই আকাশ হাতি (Akash Hati) ও বিকাশ হাতি (Vikash Hati)। উচ্ছ্বসিত পরিবার এবং প্রতিবেশীরা।
বাবা দিনমজুর, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরে কোনওমতে সংসার চালান ৷ দুই ছেলেই ছোটবেলা থেকে অত্যন্ত মেধাবী। পড়াশুনাই তাদের ধ্যান-জ্ঞ্যান। গ্রামীণ হাওড়ার শ্যামপুর-২ ব্লকের রূপনারায়ণ লাগোয়া সাঁইবেড়িয়া (Sainberia) গ্রামের আকাশ ও বিকাশ সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হলেন। বুধবার ডাক্তারির সর্বভারতীয় পরীক্ষা নিটের (NEET 2022) রেজাল্ট প্রকাশিত হলে তাতে দেখা যায় আকাশ সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ৭২০ এর মধ্যে ৬৬১ পেয়ে ২৫৮৫ র্যাঙ্ক করেছেন। পাশাপাশি বিকাশের সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক ৭৯৭৪, মোট ৭২০ এর মধ্যে ৬৩৫ পেয়েছেন তিনি।
সাঁইবেড়িয়া গ্রামের মানুষেরা বলছেন দুই ভাই ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। ওরা চায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বাবার পরিশ্রম আর হার না মানা মানসিকতা ওদেরকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ভবিষ্যতের স্বপ্ন এমবিবিএস পড়ে ডাক্তার হওয়া, জাতি গ্রামের এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষকে সুস্থ রাখতে পারেন। আকাশ আর বিকাশের এই দুর্দান্ত রেজাল্ট-এর ক্রেডিট শিক্ষক তুহিন পাত্রকে দিতে চান যমজ ভাই। ২০২১ সালে শ্যামপুর হাই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক দেওয়ার পর বাড়িতেই শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বড়ো কোনও কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার সুযোগ মেলেনি। তাই বাড়িতেই চলত কঠোর অধ্যাবসায়। মা উমা হাতির কথায়, ছোটো থেকেই ওদের মধ্যে ভীষণ জেদ আর পড়াশোনার প্রতি একাগ্রতা ছিল। তা দিয়েই ওরা সাফল্য পেয়েছে। গ্রামের ছেলেদের এহেন সাফল্যে খুশি স্থানীয়রাও।