ভাই ও বোনের সম্পর্ক সবসময় মধুর। ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হয়ে ওঠা, মারপিঠ, স্কুলে যাওয়া, খেলা এইসবের মধ্যে অটুট বন্ধনে জড়িয়ে থাকে ভাইবোন। সেই স্মৃতিগুলি আরও মধুর হয়ে ওঠে রাখি পূর্ণিমা , ভাইফোঁটার মধ্যে দিয়ে। শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে রাখি বন্ধন উৎসব পালিত হয়। বোন ও দিদিরা তাঁদের ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় এই দিনে ভাইয়ের হাতে রাখি বাঁধেন। গোটা দেশজুড়ে উদযাপন হয় আজকের দিনটি।

আরও পড়ুন:ভাইঝির বিয়েতে পাগড়ি পরা সচিনের ছবি মুহূর্তে ভাইরাল
জানেন ঠিক কবে থেকে এই প্রথার জন্ম? কেন রাখি পূর্ণিমা পালন করা হয়?
জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িকতা মেটাতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই রাখিবন্ধন অনুষ্ঠানের প্রচলন করেছিলেন। ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব, মানুষের প্রতি মানুষের গভীর ভালোবাসার অন্যতম প্রতীক হল এই পবিত্র উৎসব। ফলে রাখিবন্ধন কেবলমাত্র ভাই-বোনের মাঝেই আটকে রইল না, হয়ে উঠল হিন্দু-মুসলিমের সম্প্রীতির বন্ধন। এক মহান উৎসব।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখখিবন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন। তিনি কলকাতা, ঢাকা ও সিলেট থেকে হাজার হাজার হিন্দু- মুসলিম ভাই ও বোনকে আহ্বান করেছিলেন একতার প্রতীক হিসাবে রাখিবন্ধন উৎসব পালন করার জন্য। উনিশ শতকে আমাদের বাংলায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন চরম পর্যায়ে উঠেছিল, যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কাছে অপরিমিত ভয়ের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১৯০৫ সালের জুন মাসে লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয় এবং ১৯০৫ সালের আগস্ট মাসে বঙ্গভঙ্গ জন্য আইন পাশ করা হয়। এই আইন কার্যকরী হয় ১৬ ই অক্টোবর, ১৯০৫। তাই ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে হিন্দু ও মুসলিম এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা আনার জন্য রাখিবন্ধন উৎসব পালন করা হয়েছিল।
পুরাণ মতে, যমের অমরত্বের প্রার্থনা করে তাঁর বোন যমুনা তাঁর হাতে একটি রাখি পরিয়ে দেন। এরপরই যমরাজ কথা দেন যে ভাইয়ের হাতে তাঁর বোন রাখি পরিয়ে দেবেন, তাকে তিনি স্বয়ং রক্ষা করবেন।
আবার অনেকে বলে থাকেন শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমার দিনে হতদরিদ্র নারীর বেশে বালির কাছে আশ্রয় চান লক্ষ্মী। বালি নিজের প্রাসাদের দরজা খুলে দেন তাঁর জন্য। খুশি হয়ে লক্ষ্মী, কাপড়ের টুকরো বেঁধে দেন বালির হাতে। কথিত আছে গণেশের দুই পুত্র, শুভ ও লাভ বায়না ধরেছিল নিজেদের বোনের হাতে তাঁরা রাখি পরতে চায়। শেষে গণেশের দুই স্ত্রী, ঋদ্ধি ও সিদ্ধির অন্তর থেকে নির্গত অগ্নি সৃষ্টি করে সন্তোষীকে। তার হাত থেকে রাখি বাঁধে গণেশ পুত্ররা।
জেনে নিন রাখি বন্ধনের শুভ সময়:
১১ আগস্ট, ২০২২ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট থেকে পূর্ণিমা শুরু হবে। শুভ মুহূর্ত ১১ই আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ১২ মিনিট পর্যন্ত। তবে ১২ আগস্ট সকাল ৭ টা ৫ মিনিট অবধি পূর্ণিমা তিথি লেগে থাকছে। তাই ১২ তারিখ সকালেও বোনেরা রাখি পরাতে পারেন। জ্যোতিষীদের মতে, রাখি বাঁধার সময় ভাইয়ের মুখ পূর্ব দিকে এবং বোনের মুখ পশ্চিম দিকে হওয়া উচিত।









































































































































