প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কার(Srilanka) পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ থেকে খারাপতর হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যেই সেখানে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন হাজার হাজার মানুষ। রাষ্ট্রপতি ভবন(President House) থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন(Prime Minister house) সবই সাধারণ মানুষের দখলে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মাঝেই নিজের দেশের সরকারের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রিকেটতারকা সনৎ জয়সূর্য(Sanat Jaysurya)। পৃথিবীবিখ্যাত কমিক চরিত্র এবং ক্রিকেটের জোড়া ফলায় বিদ্ধ করলেন নিজের দেশের সরকারকে।
বুধবার শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর কড়া সুরে টুইট করেন জয়সূর্য। যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং আপাতত তদারকি প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের তুমুল সমালোচনা করে তিনি লেখেন, “মনে হচ্ছে মিস্টার বিনকে ক্রিকেট দলে নেওয়া হয়েছে। অথচ তিনি ক্রিকেটার নন। অভিনেতা। সেই কারণে নির্বাচকরা তাঁকে দল থেকে ছেঁটে ফেলেছিলেন। শুধু তা-ই নয়। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পরেও ক্রিজ ছেড়ে কিছুতেই বেরোতে চাইছেন না। খেলে যেতে চাইছেন। সব খেলা এ বার শেষ। ক্রিকেটে শেষ ব্যাটারের ব্যাট করার কোনও নিয়ম নেই। এ বার সসম্মানে বিদায় নিন।”
অবশ্য এই প্রথমবার নয়, মঙ্গলবারও সরকারের সমালোচনা করে টুইটে জয়সূর্য লিখেছিলেন, “মানুষ ক্রমশ ক্রুদ্ধ হয়ে পড়ছে। পদত্যাগ করে এ বার বাড়ি যান। মিস্টার প্রেসিডেন্ট এবং মিস্টার প্রধানমন্ত্রী কি বুঝতে পারছেন না, এটা বাস্তব! মিস্টার বিনের কোনও সিনেমা নয়। আপনারা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করছেন!” উল্লেখ্য, বিশ্বকাপজয়ী শ্রীলঙ্কা দলের তারকা সদস্য জয়সূর্য দেশের এমন গুরুতর পরিস্থিতিতে চুপচাপ বাড়ি বসে থাকেননি শুরু থেকেই। এর আগেও দেশবাসীর বিক্ষোভে যোগ দিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন তিনি। তাঁর সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সারা পৃথিবীতে। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছিল, সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন জয়সূর্য।
এদিকে রাজধানী কলম্বো–সহ পশ্চিম শ্রীলঙ্কায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। কলম্বোর রাজপথে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। রাজাপক্ষের ইস্তফার দাবি তুলেছেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে পুলিশ। জলকামানও ব্যবহার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীরা জুতো পর্যন্ত ছুঁড়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এরপরই দফায় দফায় সেনা ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। পার্লামেন্টের উদ্দেশেও মিছিল করে যান বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু পার্লামেন্টের ২০০ মিটার আগেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।