বৃহস্পতিবার সকালেই বঙ্গ সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যদিও তাঁর পূর্নাঙ্গ সফরসূচি ঘিরে বিস্তর ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বিজেপির রাজ্য নেতারাও বিভ্রান্ত। এক সময় এ রাজ্যের ডেইলি প্যাসেঞ্জার অমিত শাহ একুশের বিধানসভা ভোটে গোহারের পর আর বঙ্গ মুখী হননি। অনেক টানাপোড়েনের পর ফের বাংলায় আসছেন তিনি। তবে তাঁর সফরের সিংহভাগজুড়েই সরকারি কর্মসূচি বলে জানা যাচ্ছে।

এদিকে গত ৩ মে পবিত্র ঈদ ও অক্ষয় তৃতীয়ার শুভলগ্নে পুজো-অর্চনার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের অস্থায়ী ভবনের দ্বারোদঘাটন হয়েছে। পঞ্জিকা দেখে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্ধারিত সময় মেনেই দুপুর ১টায় নতুন ভবনের গৃহপ্রবেশের নিষ্ঠাভরে পুজো করেন দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

আপাতত বেশ কয়েকবছর পাঁচতলা গেস্ট হাউসই ঘাসফুল শিবিরের প্রধান আস্থানা হতে চলেছে। তবে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসতে না পারলেও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের অন্যান্য শীর্ষনেতারা প্রায় সকলেই এসেছিলেন।
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন ভবনে দলের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আগামিকাল ৫ মে। বিকাল ৪টে দলের রাজ্যস্থরের নেতাদের নিয়ে একটি মেগা বৈঠকের ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর ডাকা এই বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সমস্ত সদস্যদের। এছাড়াও জেলা সভাপতি ও মন্ত্রী-সাংসদদের এই বৈঠকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দলের শাখা সংগঠনের শীর্ষ পদাধিকারীদের ডাকা হয়েছে ৫ তারিখের বৈঠকে। ফলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা এই বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে।

লোকসভার আগে ২০২৩ সালে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই মনে করা হচ্ছে ৫ তারিখের এই মেগা বৈঠকের মধ্যে দিয়ে রাজ্যজুড়ে সেই প্রস্তুতিও শুরু করে দিতে চান তৃণমূল নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে “দিদিকে বলো” প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা হবে বলেও জানা যাচ্ছে এদিন।
আবার ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে আশানুরূপ ফলাফল না হওয়ার পর একেবারে তৃণমূল স্তরে জনসংযোগের জন্য “দিদিকে বলো” কর্মসূচি শুরু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তার সুফল হাতেনাতে পেয়েছেন একুশের বিধানসভা ভোটে। তাই ২০২৪-এর লোকসভা ও আগামি বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের “দিদিকে বলো” কর্মসূচিকে হাতিয়ার করে জনসযোগ দৃঢ় করতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৮ মার্চ নজরুল মঞ্চের সভায় তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করেছিলেন, তৃতীয় তৃণমূল সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির উপলক্ষে ৫ মে থেকে টানা একমাসব্যাপী দলের লাগাতার কর্মসূচি চলবে। আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে সিংহভাগ কর্মসূচি নেওয়া হবে গ্রামমুখী। বুথস্তরে জনসংযোগ আরও মজবুত করতে দলীয় সাংসদ, বিধায়ক থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ও নেতাদের গ্রামে গ্রামে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যেতে হবে। মানুষের ঘরে বসে কথা বলে সমস্যা শুনে সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবারের মেগা বৈঠকে তৃণমূলের সবচেয়ে বড় বার্ষিক কর্মসূচি ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতির দিক নির্দেশিকাও ঠিক করে দিতে পারেন দলনেত্রী। গত দু’বছর করোনা মহামারির জন্য শহিদ দিবস ভার্চুয়ালি হয়েছিল। এবছর আবার সাড়ম্বরে ধর্মতলায় ২১ জুলাই শহিদ দিবস কর্মসূচি নেওয়া হবে। একইসঙ্গে পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস, ভোজ্য তেল, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৫ তারিখের বৈঠক থেকে তৃণমূল নেত্রী কী বার্তা দেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

তবে দলের এই বৈঠকের আগে দুটি সরকারি কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। লক্ষ্মীবার দুপুর একটায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে নতুন করে আবেদনের ভিত্তিতে “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার” বিতরণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। ঠিক তার পরই নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- কোন্দলে জর্জরিত বিজেপি, দিলীপ-সুকান্তদের কটাক্ষ কুণালের



































































































































