আপনার মৌনতা ঘৃণা ভরা কণ্ঠকে উৎসাহিত করে: প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি IIM-এর পড়ুয়া-শিক্ষকদের

0
2

মোদি জমানার শুরু থেকেই একাধিকবার দেশে অসহিষ্ণুতার অভিযোগ এনেছেন বিরোধীরা। শুধু তাই নয় একই অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছেন কবি থেকে সাহিত্যিক সকলেই। এবার দেশে ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং বর্ণ-ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য অনুরোধ জানিয়ে একটি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের ছাত্র এবং ফ্যাকাল্টি সদস্যদের একটি দল। খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেছেন, এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা ঘৃণা-ভরা কণ্ঠকে উৎসাহিত করছে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা চিঠিতে মোট ১৮৩ জন স্বাক্ষর করেছেন। যার মধ্যে আইআইএম-আহমেদাবাদ এবং আইআইএম-বেঙ্গালুরুর ১৩ জন ফ্যাকাল্টি সদস্য ও ছাত্ররা রয়েছে।আইআইএম ব্যাঙ্গালোরের পাঁচজন ফ্যাকাল্টি সদস্য চিঠির খসড়া তৈরি করেছেন। তাঁরা হলেন প্রতীক রাজ (স্ট্র্যাটেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক), দীপক মালঘান (সহযোগী অধ্যাপক, পাবলিক পলিসি), ডালহিয়া মণি (সহযোগী অধ্যাপক, এন্টারপ্রেনিয়রশিপ ), রাজলক্ষ্মী ভি মূর্তি (সহযোগী অধ্যাপক, ডিসিশন সায়েন্স) এবং হেমা স্বামীনাথন (সহযোগী অধ্যাপক, পাবলিক পলিসি)। মালঘান একজন বিশিষ্ট পরিবেশগত অর্থনীতিবিদ।
সহকারী অধ্যাপক প্রতীক রাজ বলেছেন , “নিরবতা আর বিকল্প ছিল না, বুঝতে পেরে একদল ছাত্র এবং শিক্ষক এই চিঠি লেখার উদ্যোগ নিয়েছিল।অনেক দীর্ঘ সময় ধরে, মূলধারার আলোচনা বা নিবন্ধ ঘৃণার কণ্ঠকে প্রান্তিক বিষয় হিসাবে উড়িয়ে দিয়েছে। আর এভাবেই আমরা আজ এখানে এসে পৌঁছেছি।” ছাত্র ও শিক্ষকরা তাদের চিঠিতে বলেছেন, “আপনার নীরবতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ঘৃণা ভরা কণ্ঠকে উৎসাহিত করে এবং আমাদের দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলে। আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি, আমাদেরকে বিভক্ত করতে চায় এমন শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর জন্য।” চিঠিটি সাম্প্রতিক হরিদ্বার ‘ধর্ম সংসদ’ ইভেন্টের প্রেক্ষিতে লেখা হয়েছে যেখানে কিছু হিন্দু ধর্মীয় নেতা নাগরিকদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে এবং গণহত্যার আহ্বান জানিয়েছিল।চিঠিতে বলা হয়েছে, “ধর্ম/বর্ণ পরিচয়ের ভিত্তিতে সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য বক্তৃতা এবং সহিংসতার আহ্বান গ্রহণযোগ্য নয়।”

স্বাক্ষরকারীরা বলেছিলেন যে, যদিও ভারতীয় সংবিধান মর্যাদা সহকারে নিজের ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে, তবুও দেশে ভয়ের অনুভূতি রয়েছে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “আমাদের দেশে এখন ভয়ের অনুভূতি রয়েছে – সাম্প্রতিক দিনগুলিতে গীর্জা সহ উপাসনালয় গুলি ভাঙচুর করা হচ্ছে, এবং আমাদের মুসলিম ভাই ও বোনদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই সবই সংঘটিত হচ্ছে, দায় থেকে মুক্তির আশ্বাস এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার অবর্তমানে তৈরী হওয়া অসামাজিক মানসিকতার জন্য।”

আরও পড়ুন:সরকার ৪ লক্ষ বললেও ভারতে করোনায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ৩২ লক্ষ, দাবি সায়েন্স জার্নালের