করোনা মহামারির মধ্যেই জোড়া সাইক্লোনে বিপর্যস্ত হয়েছে বাংলা। গত দু’বছরে আমফান-ইয়াসের দাপটে তছনছ হয়েছে মানুষের জীবন। সেই ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াল স্মৃতি উস্কে দিয়ে এবার বঙ্গবাসীর মনে আতঙ্ক জাগিয়েছিল সৌদি আরবের নাম দেওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’। কিন্তু অবশেষে এই বাংলার জন্য স্বস্তির খবর শোনালো আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর সরাসরি কোনও প্রভাব
পশ্চিমবঙ্গে নেই। ঘূর্ণিঝড়ের কোনও সম্ভাবনা নেই বাংলার বুকে জানিয়ে দিলেন, আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্ক থাকা প্রয়োজন। উপকূলবর্তী জেলা দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং বর্ধমানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সমুদ্র এবং উপকূলের উপর ঝোড়ো হওয়া বইলেও তার গতিবেগ খুব বেশি থাকবে না। ৩৫ থেকে ৪৫ কিমি বেগে এই হাওয়া বইবে। সর্বোচ্চ তার গতিবেগ হতে পারে ৫০কিমি। এবং সেটাও রবিবার বিকেলের পর আর থাকবে না।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে সর্বশেষ খবরে জানানো হয়েছে, ল্যান্ডফলের কোনও সম্ভাবনা-ই নেই আর “জওয়াদের”। তা ক্রমশ শক্তি হারাচ্ছে। প্রয়োজনীয় জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে জাওয়া। উত্তুরে শুষ্ক ও ঠান্ডা হাওয়ায় ‘সিস্টেম’ ভেঙে গিয়েছে। ফলে তা যত স্থলভাগের দিকে এগোবে তত দুর্বল হয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ধীরে ধীরে। কাল দুপুরে পুরীতে অবস্থান করবে জাওয়াদ। তারপর এরাজ্যে ঢোকার আগেই তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। যার জেরে বৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুন:“জাদুঘরে সিপিএম”, শূন্যে নেমে আসা বামেদের তীব্র কটাক্ষ তৃণমূল মুখপত্রে
তবে একটানা তিনদিন অকাল বৃষ্টির ফলে ফসলের উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। বৃষ্টির জন্য ধান, আলু, সরষে সহ সবজি চাষে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেকারণে ফসল কাটার নির্দেশিকা বহাল থাকছে। মৎস্যজীবীদের রবিবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
কিন্তু আশঙ্কা তৈরি করেও হঠাৎ কিভাবে শক্তি হয় হল ঘূর্ণিঝড়ের? এ প্রসঙ্গে সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভারতে সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে যত ঘূর্ণিঝড় হয়, তারমধ্যে ৯০ শতাংশ নীচ দিয়ে তামিলনাড়ুর দিকে অগ্রসর হয়। আর ১০ শতাংশ জলভাগের উপরদিকের বাতাসের সঙ্গে উপর দিয়ে ‘কার্ভ’ করে সুন্দরবন ও বাংলাদেশের দিকে এগোয়। এই সময়টাতেই উত্তুরে ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস ‘সিস্টেমে’ ঢুকে পড়ায়, তা ‘জাওয়াদ’কে শক্তিশালী হতে বাধা দেয়। ফলে ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ দুর্বল হয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে যাবে। এরাজ্যে ঢোকার আগেই তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। সোমবার বিকেলের পর থেকে আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে।
তবে শীত আবার কবে পড়বে তা এখনই স্পষ্ট করতে পারেনি হাওয়া অফিস। সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই বৃষ্টির পর পারদ কিছুটা নামলেও, সঙ্গে সঙ্গে যে জাঁকিয়ে শীত পড়বে তার কোনও মানে নেই। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণত নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে জানুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত শীতকাল বিরাজ করে। ফলে অকাল বৃষ্টির জন্য রাতারাতি প্রবল ঠান্ডা পড়বে তেমনটি এখনই বলা যাচ্ছে না।













































































































































