প্রতীক্ষার অবসান, ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে, আগমনীর সুর বাজছে আকাশে-বাতাসে। ফের সময় এসেছে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার। ভাইরাসের আতঙ্ককে সঙ্গী করেই নিউ নর্ম্যাল জীবনে আরও একবার অন্যরকম পুজো।
কলকাতার মহারাজা মনীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের উদ্যোগে পুজো পরিক্রমা ২০২১, এবার এগারো তম বছরে পা দিলো, আর তাই তারা বলছে – ‘দশ পেরিয়ে এগারো, পুজো এবার তোমারও!!’ বিগত ১০ বছরের মতো এই বছরও মহাচতুর্থীর দিন শনিবার, আয়োজিত করা হয় পুজো পরিক্রমা-র।
তবে গতানুগতিক পরিক্রমা নয়। করোনা কালের সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সমাজের দুঃস্থ ও পিছিয়ে পড়া ভাইবোনেদের সঙ্গে পুজোর আনন্দ কীভাবে ভাগ করে নিতে হয়, তা বেশ বুঝেছে সাংবাদিকতার পাঠ নিতে আসা পড়ুয়ারা। শহর কলকাতায় নয়, বেলপাহাড়ির কাছে এক প্রত্যন্ত গ্রাম বাঁশপাহাড়িতে। যেখানে এখনও আধুনিকতার সঙ্গে মেলবন্ধন হয়নি মানুষের। তবে পুজো তো সবার, তাই আনন্দও সবার।

১৮০ জন শিশুর জন্য নতুন জামা কেনা থেকে শুরু করে এই পুজো পরিক্রমার যাবতীয় খরচের অর্থ কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা নিজেরাই সংগ্রহ করেছে। অন্য বিভাগের অধ্যাপকরাও এগিয়ে এসেছেন এই উদ্যোগে। এই সংকটের সময়েও বিভাগের সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছে, যা নিঃসন্দেহে আজকের দিনে এক অভিনব উদ্যোগ।

এই প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আসলে ওই শিশুগুলোর মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলাই এই পুজো পরিক্রমার মূল প্রয়াস। বিগত ৯ বছর আমরা পুজোর একটা দিন দুঃস্থ বাচ্চাদের নতুন জামা উপহার দিয়ে, তাদের এসি বাসে চাপিয়ে সারাদিন কলকাতার কিছু সেরা প্রতিমা দর্শন করতাম, সারাদিনের খাওয়া ও যাবতীয় দায়িত্বও আমরা মানে কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা নিতাম। গত বছর থেকে করোনা পরিস্থিতিতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সমাজকে একটা বার্তা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। এবছর আমরা ওই শিশুদের এবং আরও যাঁরা অতিথি থাকবেন, সকলের হাতে একটি করে পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক ও স্যানিটাইজার তুলে দেব। সকলে যাতে এই কঠিন পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়তে পারে।”


ছাত্রছাত্রীরাও দারুণ খুশি এমন প্রয়াসে। মহাচতুর্থীর দিন সকাল ১১টা নাগাদ বাঁশপাহাড়ি দুর্গোৎসব কমিটির পুজো প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠান শুরু হয় । শিশুদের হাতে নতুন জামা তুলে দিয়ে ওদের সঙ্গে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নেয় শুধু পুজো পরিক্রমার গোটা দল। সেই সঙ্গে ৩ জন দরিদ্র মেধাবী খুদে পড়ুয়াকে ‘অধ্যাপক শোভন কান্তি রায় স্মৃতি স্কলারশিপ’-ও দেওয়া হলো। ৩ পড়ুয়ার বছরভর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলো কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা।


আরও পড়ুন- লখিমপুর হিংসা: ম্যারাথন জেরার পর আশিসকে গ্রেফতার করল যোগীর পুলিশ






























































































































