ভোটপর্বের প্রথমদিকে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছিলো এবারের লড়াই ত্রিমুখী৷ কিন্তু জোরকদমে প্রচার শুরু হতেই ধরা পড়ে একুশের লড়াইয়ে তৃণমূলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি একাই। কংগ্রেস, বাম বা হঠাৎ গজিয়ে ওঠা আব্বাস সিদ্দিকি যে ‘দুধে-ভাতে’ প্লেয়ার, তা ওই তিন দল নিজেরাই বুঝিয়ে দেয়৷ অনেকটাই পিছনে ছিলো তিন দলের সংযুক্ত মোর্চা৷ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দিন থেকেই তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার প্রশ্নে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বাম-কংগ্রেসের ভোট ভাঙিয়েই বাংলায় ঘাঁটি বানাতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। তাই তৃণমূলের ভয়ের কিছু নেই। সবকিছুই চেনা এবং জানা৷
কয়েক বছর আগেও বাংলার রাজনীতিতে যাদের কার্যত অস্তিত্বই ছিল না, সেই গেরুয়া শিবিরই বাংলা দখলের যুদ্ধে তৃণমূলের ঘাড়ে এভাবে নিঃশ্বাস ফেলায় অনেকেই নানারকম ভেবেছেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের ৩ বছর পর ২০১৯ সালের লোকসভায় বিজেপি-র ভোট বেড়ে দাঁড়িয়েছিলো ৩৮ শতাংশে। একুশের বিধানসভা ভোটে গেরুয়া শিবিরের ওই উত্থান তিনি একার হাতে রুখতে পারবেন কি না, এবার মমতার কাছে এটাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো।
ভোটের ফল প্রকাশের দিন, রবিবার ইভিএম খুলতেই দেখা গেলো শুধু রুখে দেওয়াই নয়, বাংলার রাজনীতিতে গেরুয়া বাহিনী-সহ সব বিরোধী পক্ষকেই কার্যত অপ্রাসঙ্গিক বানিয়ে দিলেন মমতা৷
আরও পড়ুন-কংগ্রেসকে স্থায়ীভাবে কফিনে ঢোকালেন প্রদেশ নেতারা, কণাদ দাশগুপ্তর কলম
এটা ঠিকই, বিজেপি-র এই উত্থান এক লাফে হয়নি৷ গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানে ধরা পড়েছে ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল হওয়াই একমাত্র লক্ষ্য ছিল বঙ্গ-বিজেপির৷ কিন্তু তা হয়নি৷ খড়্গপুর সদর, মাদারিহাট এবং বৈষ্ণবনগর, মাত্র ৩ আসনেই আটকে যায় পদ্ম-বাহিনী৷ কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যায়। ২০১৯-এ ১৮টি লোকসভা আসনে জয়ী হয় বিজেপি। সেদিন থেকেই বাংলায় ‘গেরুয়া দাপটের’ শুরু৷
বিধানসভা ভোট আর লোকসভা ভোট এক নয়। দিল্লির ভোটে কোনও দল ভাল ফল করলে রাজ্যের ভোটেও তারা ভাল ফল করবে, এমন নাও হতে পারে৷ ২০২১-এর ভোট সেটাই প্রমান করেছে আরও একবার৷ বিজেপির ওই বেনজির উত্থান একাই স্তব্ধ করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷






































































































































