আর কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা। রাত পোহালেই বহুচর্চিত বাংলার হাইভোল্টেজ নির্বাচনের শেষ অর্থাৎ অষ্টম দফার ভোট গ্রহণ। করোনার ভয়ঙ্কর চোখ রাঙানির মধ্যেই আগামীকাল, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে সন্ধে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হবে।
ভোট অষ্টমীর এই পর্বে ৪ জেলার ৩৫ আসনে হবে ভোটগ্রহণ। মালদহের ৬, মুর্শিদাবাদের ১১, বীরভূমের ১১ এবং কলকাতার ৭টি নজরকাড়া আসনে হবে ভোট গ্রহণ। ভাগ্য নির্ধারণ হবে বেশ কিছু হেভিওয়েট ও তারকা প্রার্থীর।
• সাধন পাণ্ডে: দীর্ঘ বর্ণময় রাজনৈতিক কেরিয়ার বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সাধন পাণ্ডের। “পরাজয়” শব্দটি সাধনবাবুর ডিকসনারিতে নেই বললেই চলে। রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী। টানা ৮ বারের বিধায়ক। এবার জিতলে একই কেন্দ্র থেকে ট্রিপল হ্যাট্রিকের রেকর্ড হবে। ১৯৮৪ সালে প্রথমবার তৎকালীন বড়তলা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন তিনি। ২০০৬ সাল পর্যন্ত সেখানকার বিধায়ক। ২০১১ সাল থেকে মানিকতলা কেন্দ্রে লড়ছেন।
• নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়: কলকাতা উত্তরের তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়ের স্ত্রী নয়না। অভিনয় জগৎ থেকে স্বামীর হাত ধরে রাজনীতির আঙিনায় প্রবেশ। এখন দক্ষ রাজনীতিবিদ। বিতর্ক থেকে বহু দূরে। টেলিভিশন বা সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসেন না বললেই চলে। ২০০১, ২০০৬ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে তৎকালীন বৌবাজার কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন। ২০১১ নির্বাচনে দল তাঁকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। ওই কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে জিতেছিলেন প্রয়াত সোমেন মিত্র স্ত্রী শিখা মিত্র। ২০১৪ সালে শিখাদেবী দলত্যাগের পর উপনির্বাচনে ফের লড়ে জেতেন নয়না। অধুনা চৌরঙ্গি আসনে ২০১৬ সালেও তিনি জেতেন।
• পরেশ পাল: চার বারের বিধায়ক। আগে দাঁড়াতেন মানিকতলায়। ২০১১, ২০১৬ সাল থেকে তৃণমূলের টিকিটে বেলেঘাটায় দাঁড়িয়ে একটানা জিতে আসছেন। এবারও সেখানেই প্রার্থী তিনি। এলাকার দাপুটে বিধায়ক মুখচোরা হলেও কাজের মানুষ বলেই পরিচিত। শুধু রাজনীতি নয়, বছর ভর সমাজ সেবা ও ক্লাব সংগঠন নিয়েও ব্যস্ত থাকেন পরেশবাবু।
• শশী পাঁজা: রাজ্যের বিদায়ী মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী। ২০১১ এবং ২০১৬ সালে শ্যামপুকুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জেতেন তিনি। এবারও সেখানেই প্রার্থী। পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড-এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত ক্যারিশমা চিকিৎসক শশী পাঁজাকে এক আলাদা উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- পি এম কেয়ারস -এর টাকায় কেনা হবে এক লক্ষ পোর্টেবল অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর : নরেন্দ্র মোদি
• অতীন ঘোষ: কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র। দক্ষ মেয়র পারিষদ। ১৯৮৫ সাল থেকে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী কাউন্সিলর। মাঝে দু’বার আসন সংরক্ষণ-এর জন্য ভোটে দাঁড়াননি। দুর্দান্ত জনসংযোগ। দারুণ ক্লাব সংগঠক ও সমাজসেবী। এবার তিনি কাশীপুর–বেলগাছিয়া কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। বিদায়ী বিধায়ক মালা সাহার পরিবর্তে দল এবার তাঁকে টিকিট দিয়েছে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। তবে এর আগে দু’বার বাম আমলে বরাহনগর থেকে বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়ে খুব কম মার্জিনে হেরে ছিলেন। জিতলে এবারই প্রথম বিধায়ক হবেন।
• মিনাদেবী পুরোহিত: কলকাতা পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩০ বছরের বিজেপি কাউন্সিলর মিনাদেবী। ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়রও ছিলেন। তবে ২০১১ সালে জোড়াসাঁকো কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হারেন তিনি। এবার ফের লড়ছেন সেই জোড়াসাঁকো কেন্দ্রেই। প্রতিপক্ষ তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ বিবেক গুপ্তা।
•কল্যাণ চৌবে: মূলত খেলার জগতের মানুষ। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল-সহ জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক কল্যাণ এবার মানিকতলা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী। খেলার মাঠে দক্ষ প্লেয়ার হলেও রাজনীতির ময়দানে সেভাবে অভিজ্ঞ নন কল্যাণ চৌবে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর থেকে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের কাছে হেরেছিলেন তিনি। এবার প্রতিপক্ষ সাধন পাণ্ডে। ফলাফল কোন দিকে যাবে জানা নেই, তবে প্রচারে বেশ নজর কেড়েছেন কল্যাণ।
• কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরি: রাজ্য রাজনীতিতে বেশ পরিচিত মুখ। কাজের মানুষ বলে পরিচিতি থাকলেও বিতর্ক কৃষ্ণেন্দুবাবুর নিত্যসঙ্গী। তাঁর দল তৃণমূলের বিরুদ্ধেও কখনও কখনও মুখ খুলেছেন তিনি। দলও বদলেছেন। ফের ফিরে এসেছেন। এবারও মালদহের ইংরেজবাজারের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি। ইংরেজবাজারের ২ বারের বিধায়ক তিনি। যদিও গত ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে প্রবল মমতা ও তৃণমূল হাওয়ার মধ্যেও হেরে যান তিনি।
•মনোজ চক্রবর্তী: প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সবচেয়ে বিশ্বস্ত সৈনিক। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের দীর্ঘদিনের বিধায়ক। ২০১১ সালের পরিবর্তনের বছরে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট সরকারের রাজ্য মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন মনোজবাবু। এবারও কংগ্রেসের হাত প্রতীক নিয়ে বহরমপুরের প্রার্থী তিনি।
আরও পড়ুন- নজর এড়িয়ে ‘বেপাত্তা’ অনুব্রতকে নোটিশ দিয়ে সতর্ক করল কমিশন





























































































































