দেশে করোনার ব্যাটিং অব্যাহত। প্রতিদিনই নতুন রেকর্ড গড়ছে এই মারণভাইরাস। শুক্রবারে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছাপিয়ে গিয়েছে ৩ লক্ষের বেশি। সংক্রমণের রাশ টানতে রীতিমত নাকানিচোবানি খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এই পরিস্থিতিতে কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য নতুন গাইডলাইন জারি করল দিল্লির এইমস এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল রিসার্চ তথা আইসিএমআর।
গত বছর করোনার প্রথম ঢেউ কেড়ে নিয়েছিল বহু মানুষের প্রাণ। যদিও তাদের সিংহভাগই ছিল বয়স্ক মানুষ। কিন্কতু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ থেকে বাদ যাচ্ছে না কেউই। এই আবহে এইমস এবং আইসিএমআর-এর পক্ষ থেকে একটি গাইডলাইন জারি করে বলা হয়েছে, কীভাবে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করতে হবে। মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে রোগীদের। হালকা, মাঝারি এবং গুরুতর আক্রান্ত। প্রত্যেকের জন্যই আলাদা আলাদা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। জেনে নিন নির্দেশিকায় কী বলা হচ্ছে-
১) যদি কোনও ব্যক্তির শরীরে করোনার হালকা উপসর্গ দেখা যায় তবে ততক্ষণাৎ হোম আইসোলেশন চলে যেতে হবে। এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা আবশ্যক এবং ঘরের ভেতরেও মাস্ক পরে থাকতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা যাতে বজায় থাকে এবং ঘরের ব্যবহৃত জিনিসগুলি যাতে স্যানিটাইজ করা হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। যদি নিশ্বাস নিতে সমস্যা হয় এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
২) যদি কোন ব্যক্তির মাঝারি উপসর্গ হলে জ্বর, গা হাত পা ব্যথা-সহ নিশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, তাহলে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া বা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাওয়াই শ্রেয়। হাসপাতালে যদি বেড না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা মেপে নেওয়া আবশ্যক। ওই সময়ের মধ্যে যে কোনও চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আক্রান্তের বুকের এক্সরে করে সেটাও চিকিৎসককে দেখিয়ে নিতে হবে।
৩) সবশেষে গুরুতর অসুস্থ হলে কী করবেন? কোনও করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, সে ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে তাকে অবিলম্বে আইসিইউতে ভর্তি করাতে হবে। যতক্ষণ না আইসিই-তে তাঁকে ভর্তি করা যায়, ততক্ষণ অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন পরিস্থিতি অনুযায়ী কোনও রোগীকে কী ওষুধ দেওয়া যায় সেটাও এদিনের নতুন গাইডলাইনে উল্লেখ রয়েছে। যদিও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধই যেন ব্যবহার না করা হয়, এটাও বলে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও কোনওভাবে অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা ৯০ শতাংশের নীচে নেমে গেলে তা অত্যন্ত সংকটজনক। এই অবস্থায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন।
বয়স ৬০ ঊর্ধ্ব হলে এবং তার সঙ্গে যাদের ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, রক্তচাপ, হাইপারটেনশন, ফুসফুসের সমস্যা বা লিভারের কোনও জটিলতা থাকলে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এমন রোগীদের মৃত্যুর হারও অনেক বেশি। তাই এই ধরনের কোমর্বিডিটি যাদের রয়েছে, তাঁদের বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বর্তমানে রেমডেসিভিরের চাহিদা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেলেও নতুন গাইডলাইনে জানানো হয়েছে, এই ইঞ্জেকশন তাঁদেরই দেওয়া যাবে যাদের অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে না।








































































































































