হামলার তত্ত্ব খারিজ করলেন বিবেক দুবে, মুখ্যসচিব কমিশনে পাঠালেন ভিডিও ফুটেজ

0
2

নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষক এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব নির্বাচন কমিশনে আলাদা আলাদা রিপোর্ট পাঠালেও, দুই রিপোর্টে কার্যত কোনও ফারাক নেই। কারো রিপোর্টেই “হামলা”-র কথা বলা হয়নি৷

“নন্দীগ্রামের (Nandigram) ঘটনায় হামলার কোনও প্রমাণই মেলেনি। এটি নিতান্তই
দুর্ঘটনা৷” এই রিপোর্টই শনিবার কমিশনে জমা দিলেন বিশেষ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। সূত্রের খবর, জেলায় গিয়ে তদন্তের পর কমিশনে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন দুবে, তাতে জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোট পুরোপুরি দুর্ঘটনাজনিত। নির্বাচন কমিশন (ECI) নিযুক্ত পর্যবেক্ষক (OBSERVER) শনিবার কমিশনে রিপোর্ট পেশ করে মূলত এ কথাই বলেছেন৷

ওদিকে, হামলা না দুর্ঘটনা, দ্বিতীয় বারের রিপোর্টেও তা স্পষ্ট করতে পারলেন না রাজ্যের মুখ্যসচিব৷ সূত্রের খবর, শনিবার আলাদাভাবে পাঠানো দ্বিতীয় রিপোর্টে কমিশনের কাছে মুখ্যসচিব (Chief Secretary) নন্দীগ্রামের সেদিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়েছেন৷

বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এবং পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে কমিশনে পেশ করা তাঁদের রিপোর্টে বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী (MAMATA BANERJEE) আহত হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তার পিছনে হামলার কোনও ঘটনা নেই৷ প্রসঙ্গত, ভোটের মুখে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে রাজ্যে রাজনৈতিক পারদ উর্ধ্বমুখী। প্রকৃত ঘটনা জানতে কমিশনের নির্দেশে জেলায় যান দুই পর্যবেক্ষক৷ কথা বলেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে৷ তারপরই রিপোর্ট পাঠান কমিশনে৷ গুরুত্বপূর্ণ এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আদৌ কোনও হামলা বা হামলার চেষ্টা হয়নি৷ এটি পুরোপুরি দুর্ঘটনা৷

প্রসঙ্গত, আহত হওয়ার পরমুহুর্তেই ঘটনাস্থলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ এনেছিলেন, ষড়যন্ত্র করে তাঁর উপর হামলা হয়েছে৷ অথচ পরদিন হাসপাতাল থেকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় কোনও রকম হামলার কথাই বলেননি মুখ্যমন্ত্রী ৷ বলেছিলেন, ভিড়ের চাপে গাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েই বিপত্তি ঘটায়৷ দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকও তাঁদের রিপোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গেই সহমত প্রকাশ করেছেন৷ যদিও তৃণমূলের একাধিক নেতা এখনও নন্দীগ্রামের ওই ঘটনাকে পরিকল্পিত হামলা বলেই চিহ্নিত করছেন৷

এদিকে, কমিশনের নির্দেশে শনিবারই দ্বিতীয় রিপোর্টটি পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব৷ এই রিপোর্টেও মুখ্যসচিব স্পষ্ট করতে পারেননি সেদিন হামলা হয়েছিলো, না’কি দুর্ঘটনা ঘটেছিলো৷ কমিশনের কাছে মুখ্যসচিব নন্দীগ্রামের সেদিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়েছেন৷ ফুটেজের সঙ্গে পাঠানো রিপোর্টে মুখ্যসচিব বলেছেন, ঘটনার দিন উপচে পড়া ভিড়ের মাঝখান দিয়ে যাচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। প্রবল ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। ফলে ভিডিও ফুটেজে পরিষ্কার কিছু বোঝা যাচ্ছে না৷ ফুটেজ দেখেও বোঝা যাচ্ছে না, কেউ বা কারা সেদিন গাড়ির দরজার ধাক্কা মেরেছিলো না’কি ভিড়ের চাপে দরজা বন্ধ হয়ে বিপত্তি ঘটিয়েছে৷

মুখ্যসচিবের প্রথম রিপোর্ট পাওয়ার পরেও তাঁর কাছে একাধিক প্রশ্নের উত্তর তলব করে কমিশন৷ কমিশনে পাঠানো মুখ্যসচিবের প্রথম রিপোর্টে বলা হয়েছিল, হঠাৎ দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে চোট লেগেছে। বাইরে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। সূত্রের খবর, এর পর কমিশন ফের একাধিক প্রশ্নের উত্তর চায় মুখ্যসচিবের কাছে৷ কারন, প্রথম রিপোর্টে স্পষ্ট করে উল্লেখ ছিল না মুখ্যমন্ত্রী গাড়ির দরজায় কীভাবে ধাক্কা লাগল? দরজা বন্ধ হওয়ার সঠিক কারণ কী? মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছিল কি’না, তাও জানতে চেয়েছিল কমিশন। সেকারণেই মুখ্যসচিবের কাছে দ্বিতীয় রিপোর্ট তলব করা হয়। শনিবার সেই রিপোর্ট পেশ করেন মুখ্যসচিব৷ জানা গিয়েছে, মুখ্যসচিব তাঁর দ্বিতীয় রিপোর্টে জেড প্লাস নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কতজন পুলিসকর্মী থাকেন, কোন পদমর্যাদার অফিসাররা থাকেন, ঘটনার দিন মুখ্যমন্ত্রী কোন গাড়িতে ছিলেন, বিস্তারিতভাবে তা জানিয়েছেন। কিন্তু সেদিন ঠিক কী ঘটেছিলো, দুর্ঘটনা না হামলা, তা স্পষ্টভাবে জানাতে পারেননি৷

আরও পড়ুন- আগে থেকেই ছেলের হারের ভয় পাচ্ছেন বাবা? শিশিরের মন্তব্য ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে

Advt