
ভোটের দিন এখনও সরকারি ভাবে ঘোষণা হয়নি। কিন্তু, রবিবার, ছুটির দিন শিলিগুড়িতে প্রচারের ছবি বুঝিয়ে দিল এবারও শিলিগুড়িতে বাম-কংগ্রেসের জোটের সঙ্গে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে তৃণমূল সহ সব দলকেই। এবং সত্তরোর্ধ্ব এক রাজনীতিকের সঙ্গেই লড়াই করতে হবে তৃণমূলকে এবং বিজেপিকেও। তিনি হলেন শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য।
হ্যাঁ, রবিবার দিন কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করেই সকাল-সকাল দেখা গেল তাঁকে পথে নেমে পড়তে। নানা ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের ঘরে-ঘরে গিয়ে হাজির হচ্ছেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান পুরবোর্ডের রাজ্য সরকার মনোনীত প্রশাসক অশোকবাবু। তাঁর ছোটাছুটি দেখে কে বলবে কদিন আগেই তিনি করোনায আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হয়েছেন।
ফলে, অশোকবাবু সমাদৃত হচ্ছেন ঘরে-ঘরে। অন্তত, প্রবীণ রাজনীতিকের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কিছু নবীন প্রজন্মের প্রতিনিধির চেয়েও বেশি উদ্দীপনা দেখে বাসিন্দারা অনেকেই বলে দিচ্ছেন, যে যাই বলুক, এখনও শিলিগুড়িতে অশোকদার বিকল্প কোনও দলই তৈরি করতে পারেনি। এমনকী, সিপিএমও অশোকবাবুর বিকল্প এখনও কাউকে তুলে ধরতে পারেনি।
কী প্রচার করছেন অশোকবাবু! দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন এবং অশোকবাবু দাবি করছেন, তাঁর কাছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কোনও কাজ হচ্ছে না বলে অনেক অভিযোগ এসেছে। তিনি কটাক্ষ করে জানিয়েছেন, পিকে (প্রশান্ত কিশোর) তৃণমূলকে ডুবিয়ে দেওয়ার পক্ষে একাই যথেষ্ট!
তৃণমূল কিন্তু পুরোদস্তুর রণং দেহী মেজাজে শিলিগুড়িতে আসরে নেমে পড়েছে। দার্জিলিং জেলার সমতলের তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার ওরফে রাণাও সকালবেলাতেই সরকারের গত ১০ বছরের রিপোর্ট কার্ড হাতে নিয়ে ঘরে ঘরে বিলি শুরু করেছেন। রঞ্জনবাবু বলছেন, অশোকবাবু কী বলছেন তা জানা নেই তবে এটা বলতে পারি, ওঁকে কোরামিন দিয়েও আর রাজনীতিতে টিঁকিয়ে রাখা যাবে না। রাজ্যের তেকে পর্যাপ্ত টাকা পেয়েও শিলিগুড়ি শহরের অনুন্নয়ন করতে না পারার জন্যই অশোকবাবুকে শিলিগুড়িবাসী এবার ছুঁডে ফেলেন দেবেন।
বস্তুত, শিলিগুড়িতে গুছিয়ে আসরে নেমে পড়েছেন অশোকবাবু। তাঁর সঙ্গে সামিল কংগ্রেসের নেতারাও। ইতিমধ্যেই জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বামেদের সঙ্গে যৌথ প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু, সেই তুলনায় তৃণমূল এখনও দলের সব গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে আসরে নামতে পারেনি বলেই দলের একাংশের দাবি।
বাকি বিজেপি। যে বিজেপি গোটা রাজ্যের মতো সিলিগুড়িতেও জয়ের স্বপ্ন দেখছে, সেখানে তাঁদের মুখ কে এখনও ঠিক করে উঠতে পারেনি বলেই দল সূত্রের খবর। গত বছর দুর্ঘটনায় জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী প্রয়াত হওয়ার পর থেকে বিজেপি শিলিগুড়িতে খানিকটা। যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের নেতা নিজেকেই শিলিগুড়ি বিধানসভার হবু প্রার্থী হিসেবে গোপনে দাবি করে কাজকর্ম শুরু করেছেন।
কিন্তু, অশোকবাবুর মতো চালিয়ে ব্যাট করতে অভ্যস্তের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো মুখ কোথায় শিলিগুড়ির বিজেপিতে! রাজ্যের এক দশকের শাসক দলই এখথনও জবরদস্ত প্রার্তী দাঁড় করাতে পারেনি তো বিজেপি কীভাবে পারবে সেটাই এখন মস্ত বড় প্রশ্ন।
আরও পড়ুন- মোদির মন কি বাত অনুষ্ঠান চলাকালীন থালা বাজিয়ে প্রতিবাদ কৃষকদের