একটি ছবি। আর সে নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল। বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে মঙ্গলবার দুপুরে বিজেপির (BJP) সভা। মূল বক্তা বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) এবং সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী ( Suvendu Adhikari)। সভায় কে কী বললেন, সেটা বড় বিষয় নয়, কে, কোথায়, কীভাবে বসলেন সেটা নিয়েই রাজনীতির অন্দরে তুমুল আলোচনা। প্রশ্ন, এটা প্রতীকী ছবি, নাকি এটাই আপাতত বিজেপির অন্দরে আসল দৃশ্য?
পূর্বস্থলীর সভার মঞ্চের দৃশ্যটা ছিল এইরকম। রীতমতো রাজসিংহাসন মার্কা চেয়ারে বসে রয়েছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পাশে সাধারণ চেয়ারে শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয়, মাঝে দেখা গেল দিলীপ পায়ের উপর পা তুলে বসে আছেন। পায়ের দিক নির্দেশ শুভেন্দুর দিকে। কেউ কেউ বলছেন, এটা কাকতালীয় ব্যাপার। দিলীপ বিভিন্ন সময়ে এইভাবেই বসেন। তাঁর কাছে এভাবে বসাটা নতুন নয়। তিনি সব সময়েই থাকেন রাজার মেজাজে। আবার নিন্দুকরা বলছেন, এটা আসলে প্রতীকী দৃশ্য (symbolic picture)। নব্য বিজেপিতে আসা নেতা-নেত্রীদের আসলে এইভাবেই রাখতে চাইছে আদি বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির অন্দরে আদি-নব্য ( Old and New Bjp) লড়াই অবশ্য বহুদিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। মুকুল রায়দের দলে আসার পর থেকেই বিজেপির অন্দরে অসন্তোষ। কেন? আদি বিজেপিরা মনে করছে, এই সব নব্য বিজেপিরা দলের বোঝা। তাদের অপকীর্তির দায় নিতে হচ্ছে দলকে। জবাব দিতে হচ্ছে নানা প্রশ্নের। শুধু তাই নয়, তাদের দাবি মেনে দলে জায়গা দিতে হওয়ায় এতদিন ধরে যারা লড়াই করে রাজ্যে বিজেপিকে প্রতিষ্ঠিত করলেন, তাঁরা অবহেলিত হচ্ছেন। সেই কারণে জিতেন্দ্র তেওয়ারির যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়াতে শুরুতেই বাধা দেন আদি বিজেপি পন্থীরা। জিতেন্দ্রকে পুরনো দলেই ফিরতে হয়েছে। মুখ খোলার জন্য সায়ন্তন সহ দলের তিন নেতাকে শোকজ নোটিশ ধরালেও তাঁরা ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, এ প্রতিবাদ চলবে। বেনোজল ঢোকা বন্ধ করতে হবে। বিজেপির বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হচ্ছে। দলে এ নিয়ে আরও সরব হতে হবে।
খোদ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ নিয়ে কী ভাবছেন? তিনি প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কিছু বলেননি। কিন্তু অন্দরমহলের খবর, তিনিও মুড়ি-মুড়কির মতো অন্য দলের নেতাদের নেওয়ায় বিজেপির তৃণমূলস্তরের কর্মীরা আস্থা হারাচ্ছেন। তাঁরা ভাবছেন বিজেপির নেতারা যোগ্য নন। তৃণমূলকে হারাতে পারবেন না। তাই তাদের নেতা-কর্মীদের দলে আনা হচ্ছে।
আর সেই ছবিরই কি প্রতিক্রয়া দেখা দিল পূর্বস্থলীর মঞ্চে? রাজনৈতিক মহলের গুঞ্জনে কিন্তু নানা প্রশ্ন।

































































































































