মহারাষ্ট্রের পুনরাবৃত্তি যাতে বিহারে না হয় সেজন্য এবার সতর্ক বিজেপি। তাই তৃতীয় দল হওয়ার পরেও নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছে গেরুয়া শিবির।
একদিকে অঙ্ক, অন্যদিকে সমীকরণ। আর এই দুইয়ের মধ্যে আপাতত সরল অঙ্কের হিসাবকে দূরে রেখে সমীকরণকেই প্রাধান্য দিতে হচ্ছে। বিহারে শক্তিবৃদ্ধির স্বপ্ন পূরণ হলেও এই সমীকরণেই মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির কেউ হবেন না, হবেন আসন সংখ্যার বিচারে তৃতীয় স্থানে নেমে আসা জেডিইউ এর নেতা নীতীশ কুমার। সরকার গড়তে এক্ষেত্রে আসনের অঙ্কের চেয়েও প্রাধান্য দিতে হচ্ছে ব্যক্তিকে। বিহারে সরকার গড়তে অন্য বিকল্প নেই বিজেপির সামনে।
অথচ এবারের ভোটে বিহারে এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও একদিকে জেডিইউ এর আসন ব্যাপকভাবে কমেছে এবং অন্যদিকে বেড়েছে বিজেপি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জোটে ‘বিগ ব্রাদার’ হওয়ার পর বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর দাবি তুলেছেন রাজ্যের নেতারা। কিন্তু সেই দাবি উড়িয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়ে দিয়েছে নীতীশ কুমারই বিহারে এনডিএর নেতা। তিনিই হবেন মুখ্যমন্ত্রী। এর একাধিক কারণ আছে। প্রথমত, ধারে ভারে নীতীশের সম মর্যাদার কোনও নেতা বিহার বিজেপিতে নেই। আর দ্বিতীয় কারণ হল, এনডিএর শরিক হয়েও এলজেপির চিরাগ পাসোয়ানের প্রবল নীতীশ বিরোধিতাকে গোপনে বিজেপি মদত দিয়েছে বলে মনে করেন নীতীশও। ভোটপর্বে গেরুয়া শিবির চিরাগের ভূমিকার সমালোচনা না করায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ নীতীশকুমার। এলজেপি ভোট কাটার ফলেই জেডিইউ প্রার্থীদের বহু আসন হারাতে হয়েছে। এই অবস্থায় সংখ্যার জোরে বিজেপির কোনও নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করা হলে নীতীশ যদি রাগ মেটাতে মহাজোটকে সমর্থন করে দেন তাহলে এনডিএ সরকার গড়ার সব চেষ্টা জলে যাবে। তাই বাধ্য হয়েই নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী মানতে হচ্ছে বিজেপিকে। আর সেজন্য জোটধর্ম রক্ষা ও পূর্ব প্রতিশ্রুতির কথা শোনাতে হচ্ছে তাদের। অমিত শাহদের স্মৃতিতে এখনও টাটকা, কীভাবে মহারাষ্ট্রে এনডিএ জিতেও সরকার গড়তে পারেনি বিজেপি। সেখানে শিবসেনা এনডিএ ছেড়ে বিরোধী জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করেছে। আর মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে জেদাজেদির মাসুল দিয়ে বিজেপিকে বসতে হয়েছে বিরোধী আসনে। মোদি- শাহ- নাড্ডারা বিহারে মহারাষ্ট্রের পরিণতি দেখতে চান না বলেই নীতীশ কুমারই হবেন মুখ্যমন্ত্রী।

তাই ফলাফলের অঙ্ক দেখে বিজেপির রাজ্যস্তরের কোনও কোনও নেতা আগ বাড়িয়ে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর দাবি তুললেও তাকে আমল দিচ্ছেন না দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা বিহারের পর্যবেক্ষক ভুপেন্দ্র যাদব বলেছেন, আমরা ভোটের আগে মানুষের সামনে যে কথা দিয়েছিলাম তা থেকে সরে আসার প্রশ্নই নেই। নীতীশ কুমারই বিহারের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন। জোটে কোন শরিক কটা আসন পেল তা এক্ষেত্রে বিবেচ্য নয়। আমরা জোটধর্ম রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
আরও পড়ুন:নীতীশ বললেন জনতাই মালিক, ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকেও



































































































































