ভারতীয় নবজাগরণের পথিকৃৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী সমাপ্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এই মহান মানবতাবাদীর জীবন ও সংগ্রাম আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হল কলকাতার 14 নম্বর ওয়ার্ড। আধুনিক শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে গিয়ে বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার সংস্কার করার প্রয়োজন অনুভব করেছিলেন৷ সেই অনুভূতিরই যুগান্তকারী ফসল ‘বর্ণপরিচয়’৷ ১৮৫৫ সালের এপ্রিলে ‘বর্ণপরিচয়’–এর প্রথম ভাগ এবং জুনে দ্বিতীয় ভাগ প্রকাশিত হয়৷ সেই প্রকাশনা সংস্থার বর্তমান প্রকাশক দেব সাহিত্য কুটিরের কর্ণধার রূপা মজুমদারের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে, সমাজসেবী সুপ্তি পাণ্ডে, প্রাক্তন সাংসদ তথা সাংবাদিক কুণাল ঘোষ, যুবনেতা মৃত্যুঞ্জয় পাল প্রমুখ।
শিশুদের বাংলা বর্ণের সাথে পরিচয় ঘটানোর ক্ষেত্রেও বিদ্যাসাগরের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অত্যন্ত বাস্তবসম্মত৷ শারদোৎসবের প্রাক্কালে তাঁর লেখা বইগুলি ছোটদের মধ্যে বিতরণ করা হল রবিবার ।
বর্ণপরিচয়ের প্রভাব ভারতের অন্যান্য ভাষাগুলিকেও তাদের ভাষাগত বুনিয়াদ গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে৷ এটা ছিল ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে এক নতুন দিশারি৷ আধুনিক শিক্ষাচিন্তার আধারের উপর দাঁড়িয়ে ভাষাশিক্ষার প্রাথমিক ধাপটি কেমন হবে বিদ্যাসাগরের তারই হদিশ দিয়েছিলেন৷ এরই পাশাপাশি, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশেষত বাংলা গদ্যকে তিনি নবনির্মাণ করে গিয়েছেন৷ শিশুদের হাতে তাই বিদ্যাসাগরের লেখা বই তুলে দিতে পেরে বেজায় খুশি যুব নেতা মৃত্যুঞ্জয় পাল। তিনি বলেন, বিদ্যাসাগরের লেখার মাধ্যমেই তার চিন্তাভাবনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে । ছোটদের মধ্যে সেই চিন্তাভাবনাকে আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতেই আজ আমাদের এই উদ্যোগ ।
মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, দারুণ লাগছে আমার, যে এই বইগুলো পাওয়া যাচ্ছে এবং দেওয়া হচ্ছে। আমি এইগুলো আরও ছড়িয়ে দিতে চাই। পরে আবার প্রকাশনার সঙ্গে কথা বলব।
দেব সাহিত্য কুটিরের প্রকাশক রুপা মজুমদার বলেন, আজকের এই উদ্যোগ সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী। কারণ, বিদ্যাসাগর যে ‘বর্ণপরিচয়’ লিখেছিলেন তা আজ বিতরণ করা হল । এর মাধ্যমে মানুষের শুভবুদ্ধির উদয় হয়। মানুষের সেই চেতনাকে উস্কে দিতে আজকের এই উদ্যোগটি প্রশংসনীয় ও সাধুবাদযোগ্য। রাজ্যের প্রাক্তন সাংসদ তথা সাংবাদিক কুণাল ঘোষ বলেন, আজকে বিদ্যাসাগরের লেখা বইগুলি ছোটদের মধ্যে দেওয়া হল । আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এটা কিন্তু ইউনিক। এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগ এই ওয়ার্ডের যুবরা নিয়েছেন, এটা সত্যিই প্রশংসনীয় ।
সমাজসেবী সুপ্তি পাণ্ডে বলেন, বিদ্যাসাগরের লেখা বইগুলি ছোটদের হাতে তুলে দিয়ে তাদের আমরা বোঝাতে চাই যে তাদের এই বইগুলো পড়া কতটা আবশ্যিক।
এরই পাশাপাশি রবিবার দুঃস্থ পরিবারগুলিকে পুজোর নতুন জামা, শাড়িও দেওয়া হয়। মৃত্যুণ, প্রশান্ত, সম্রাটদের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন সবাই । বিদ্যাসাগরের বইগুলি আরও বেশি পড়ুয়াদের হাতে ভবিষ্যতে তুলে দিতে চান এই যুবরা।তাদের বক্তব্য, বাংলার মনীষীদের কাজ নিয়ে এখনকার প্রজন্মের অবশ্যই জানা দরকার। নতুন প্রজন্ম যেন বর্ণপরিচয়কে ভুলে না যায়।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.