কলকাতা পুরসভার অভূতপূর্ব সাফল্য, গতবারের তুলনায় চার গুণ বেশি বৃষ্টিতেও ডেঙ্গুর প্রকোপ নেই

0
2

বর্ষা এলেই শহর কলকাতা জুড়ে বিভীষিকার মতো দেখা দেয় ডেঙ্গু। বিগত কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তবুও বিগত বছরগুলিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও তার বলি হতে হয়েছে অনেক মানুষকেই। স্বাভাবিকভাবে এবারও আগে ডেঙ্গু আতঙ্ক গ্রাস করছিল শহরবাসীকে। কিন্তু সতর্ক ছিল পুরসভা। সতর্ক ছিল প্রশাসন।

করোনা আবহে গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব যাতে না ঘটে, তার জন্য অনেক আগে থেকেই কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু বর্ষা পড়লেই নয়, প্রায় সারা বছর ধরে পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করেছেন পুরকর্মীরা। আবাসন থেকে শুরু করে বস্তিবাসীদের সচেতনতার জন্য শহরজুড়ে প্রচুর বিজ্ঞাপন ও প্রচার করার পাশাপাশি যাতে কোথাও জল না জমে, এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে করোনা আতঙ্কের মধ্যেই শহরে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে এক নাবালকের। তারপরও পরিসংখ্যানে বলছে, চলতি বছর শহরে ডেঙ্গির সংক্রমণ লক্ষণীয় ভাবেই কম। গত বছর ২৭ জুলাই পর্যন্ত শহরে ৪৮৯ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বার ২৭ জুলাই পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা মাত্র ৮৮ বলে পুরসভা সূত্রের দাবি।

করোনা মোকাবিলায় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের ডেঙ্গি ঠেকাতেও সুবিধা হচ্ছে বলে পুরসভার আধিকারিকরা মনে করছেন। পর্যবেক্ষণ। কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “করোনা আবহে কলকাতার নাগরিকদের একটা বড় অংশ যেমন সচেতন হয়েছেন, তেমনই পুরকর্মীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডেঙ্গির বিরুদ্ধে লড়ছেন। সব মিলিয়েই ডেঙ্গির প্রকোপ এবার অনেক কম।”

ডেঙ্গু নিয়ে পুরসভার তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের ১ মে থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ২৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল শহরে। সেখানে এ বছর একই সময়কালে বৃষ্টি হয়েছে ১০৮৬ মিলিমিটার। পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস জানাচ্ছেন, “কলকাতায় গত বছরের তুলনায় বৃষ্টিপাত চার গুণ বাড়লেও এ বার শহরের পরিবেশে ডেঙ্গি বহনকারী এডিস মশা জন্মানোর পক্ষে অনুকূল ছিল না, তাই প্রকোপ নেই বললেই চলে।”

লকডাউনে দীর্ঘদিন দোকানপাট প্রায় বন্ধ ছিল। ফলে চায়ের কাপ থেকে শুরু করে থার্মোকলের প্লেট, ডাবের খোলায় জল জমতে পারেনি। পাশাপাশি, লকডাউনে অনেকেই সময় পেয়ে বাড়ির ছাদ, ফুলের টবে নজর রেখেছেন। ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তও তাই এবার কমেছে।