Breaking: তাপসী মালিক হত্যার আসল নায়ক কি এখনও অধরা?

0
2

সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় ওই এলাকায় ধর্ষিত ও খুন হয়েছিলেন তাপসী মালিক।
তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় ওঠে।
তুমুল চাপের মুখে গ্রেপ্তার হন সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত ও দেবু মালিক।
তাঁরাই দোষী বলে চিহ্নিত হন।
কিন্তু পরে হাইকোর্ট তাঁদের জামিন দেয়।
বিস্ময়কর ঘটনা, তৎকালীন বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় এই জামিন মঞ্জুর করার পর 12 বছর কেটে গিয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য মামলাটি আর ওঠেনি।

পুলিশ ও সিবিআই সূত্রে খবর, নিম্ন আদালতের রায়ের মধ্যে বেশ কিছু ফাঁক দেখেছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতিরা। বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায়ও নিশ্চিত হতে পারেননি এঁরাই খুনি কিনা। শেষে জনমত ও মিডিয়ার হাওয়ার বাইরে গিয়েই তিনি জামিনের নির্দেশ দেন।

তদন্তকারী এজেন্সি সূত্রের খবর, সেই সময় হাইকোর্ট যে ফাঁকগুলি ধরেছিল, তা রাতারাতি মেরামত করা সম্ভব ছিল না।

যেমন: তদন্তের সময় বলা হয়েছিল সুহৃদ দত্ত আর দেবু মালিকের পলিগ্রাফি টেস্ট হবে।
কিন্তু তা হয়নি।
দেবু মালিকের একটি স্বীকারোক্তির বয়ান মামলার বিচারে গুরুত্ব পায়।
হাইকোর্ট এই স্বীকারোক্তির বয়ানকে গুরুত্ব দেয়নি। কারণ 1) এর সঙ্গে যুক্তিগ্রাহ্য প্রমাণ ছিল না।

2) দেবু মালিক স্বীকারোক্তি দেন এক বিচারকের সামনে যিনি বাংলা জানেন না। অথচ দেবু বলেছিলেন বাংলায়।

3) এক অনুবাদক তখন মধ্যস্থতার কাজ করেন। যাঁকে নিয়ে এসেছিলেন তদন্তকারী অফিসারই। তিনিই বয়ান রেকর্ডের আসল লোক।

4) পরে দেবু বলেছিলেন তিনি কোনো স্বীকারোক্তি দেননি।

এ ধরণের আরও কিছু বিষয় ছিল।
ফলে হাইকোর্ট সুহৃদবাবুদের জামিন দেয়।

বিষয়টা এমন: হাইকোর্ট নিশ্চিত ধর্ষণ ও খুন হয়েছে।
এর জন্য সুপারি কিলার ও ধর্ষক নিযুক্ত ছিল।
কিন্তু এই মাথাটা কে?

যেখানে সিপিআইএমের নয়নের মণি তখন ওই কারখানা, সেখানে এত বড় কান্ড করে গোলমাল টেনে আনবেন সিপিএম নেতারাই? মোটিভও মিলছে না।
তাছাড়া এখানে তৎকালীন শাসকদলের মধ্যেও চোরাস্রোত ছিল। মহাকরণের একাংশ নিজেদের পরিচ্ছন্নতা প্রমাণে বলি দেওয়ার রাজনীতিতে জড়িয়েছিল বলেও পার্টির একাংশ ক্ষুব্ধ ছিল।

তদন্তকারী এজেন্সি সূত্রের খবর, একাধিক কারণে তদন্তের কাজ জটিল হয়ে গিয়েছে। সেটা নিম্ন আদালতেও বোঝা গিয়েছিল। কিন্তু জ্বলন্ত ইস্যুতে নিম্ন আদালতের ভূমিকা তদন্তকারী এজেন্সির পক্ষে যায়। হাইকোর্টে বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এসে বিষয়টা ধাক্কা খায়।

একটি সূত্র বলছে, সুহৃদবাবুরা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু ঘটনাস্থলে তাপসীর ওই পরিণামের চক্রান্ত করেননি।

প্রশ্নটা এখনও সেখান থেকেই- তাপসীহত্যার আসল চক্রান্তকারী কি এখনও অধরা?