২০১০ সালের ২৭ মে ঝাড়গ্রামের জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। কেটে গিয়েছে দশ বছর। তবে তখনকার সরকারের আশ্বাসের বিন্দুমাত্র ক্ষতিপূরণ পায়নি নিখোঁজ হওয়া মানুষগুলোর পরিবার। ওই দুর্ঘটনায় ১৪৯ জন যাত্রী মারা যাওয়ার পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত খোঁজ নেই ১৫-১৭ জন যাত্রীর। মেলেনি ডেথ সার্টিফিকেটও। এই কারণে পাওয়া যায়নি ক্ষতিপূরণের টাকা।
এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে ক্ষোভ উগরে দিলেন নিখোঁজ পরিবারগুলির আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত। তিনি বলেন, “সরকারের অমানবিকতা এবং উদাসীনতায় আজও ক্ষতিপূরণ পেলেন না জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনায় নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবার-পরিজনরা। যেখানে রেল দপ্তর ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে দিয়েছে সেখানে কেবলমাত্র রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় ডেথ সার্টিফিকেট মিলছে না৷ ফলে ক্ষতিপূরণের টাকা থেকে এখনও বঞ্চিত পরিবারগুলি। বারবার আবেদন-নিবেদন করেও সদুত্তর না পাওয়ায় তাঁরা কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ।”
ঠিক ১০ বছর আগে অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া এলাকার সরডিহা এলাকায় ঘটে ভয়াবহ জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনা। সেই সময় রেল দফতর থেকে আহত, নিহতদের ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছিল। ঘটনাটির পর আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণের জন্য রাস্তায় নেমেছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী তথা এই সময়ের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তখন বাম সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বার করে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপর কেটে গেছে দশ বছর। এরপর সরে গিয়েছে বাম শাসন। ক্ষমতায় এখন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রতিবছর ২৭ মে জ্ঞানেশ্বরী ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোক দিবস পালন করে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে আজ পর্যন্ত নিখোঁজ যাত্রীদের ডেথ সার্টিফিকেট তাদের পরিবারের হাতে তুলে দিতে পারেনি রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, S5 কামরায় বেশিরভাগ যাত্রী ছিল হাওড়া ও কলকাতার বাসিন্দা।
নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিপূরণ ডেথ সার্টিফিকেট না পেয়ে অবশেষে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরে ঝাড়গ্রামে দেওয়ানি মামলা করে।
নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারগুলির অভিযোগ, একবার তাঁরা নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য গেলেও তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয় ।
এখনও পর্যন্ত নিখোঁজদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ নাম পাওয়ার বিষয়েএ বিজেপি জেলা সভাপতি সমিত দাস বলেন, “শুধুমাত্র মানবিকতা এবং সদিচ্ছার অভাবের কারণে আজও অবহেলিত নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবার পরিজনেরা ।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার এঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েও পালন করেনি। আমরা প্রতিবছর জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনার শোক দিবস পালন করে থাকি। এবারেও লকডাউনে বাড়ি থেকেই শোক পালন করেছি। তবে রেলযাত্রীর পরিবার পরিজনেরা কেন ক্ষতিপূরণ পায়নি তা বলতে পারব না । তবে সত্যি যদি তাঁরা নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবার-পরিজন হয়ে থাকেন এবং ক্ষতিপূরণ না পেয়ে থাকেন তবে তার ব্যবস্থা করা উচিত।”
আদৌ কি পাবে নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিপূরণ?































































































































