গত পঞ্চাশ বছরে এমন বিপর্যয় দেখেনি কলকাতা। ঘূর্ণিঝড় আমফানের সেই তাণ্ডবের পর ছ’ দিন কেটে গেলেও এখনও কলকাতার অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। সমস্যা রয়েছে পানীয় জলেরও। তাই বিদ্যুৎ ও জলের দাবিতে মঙ্গলবারও সকাল থেকে বিক্ষোভে ফুঁসল শহর থেকে জেলা। এ দিন সকাল থেকেই দক্ষিণ কলকাতার বেহালা, যাদবপুর, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড, টালিগঞ্জ, বাঘাযতীন মোড়, হরিদেবপুর বাদামতলা, ঠাকুরপুকুর কালীতলা, ডায়মন্ড পার্ক, গড়িয়া, গরফা সাঁপুইপাড়া-সহ বেশ কিছু জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়রা। ঘেরাও হয় পর্ণশ্রী থানা।
উত্তর ২৪ পরগনার কার্তিকপুরে বারাসত-টাকি রোড অবরোধ করেও চলে বিক্ষোভ। নদিয়ার চাকদহের গোরপাড়া মোড়ে মানুষ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। এখনও অন্ধকারে ডুবে, সুন্দরবন-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। জেলার ৬২টি সাব স্টেশনের মধ্যে ১৫টি অচল। প্রায় ৪৬ হাজার খুঁটি উপড়ে গিয়েছে।
গত ৬ দিন ধরে বিদ্যুৎ না-থাকায় সব থেকে সমস্যা হচ্ছে বয়স্ক, অসুস্থ ও শিশুদের। বিদ্যুৎ বিপর্যয় প্রসঙ্গে এ দিনও সিইএসসিকে দোষারোপ করেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের বিক্ষোভ মূলত জল ও আলো না-থাকার কারণেই। এর জন্য সিইএসসি-ই দায়ী। এনাফ ইজ এনাফ।’’ বাসিন্দাদেরও অভিযোগ, সিইএসসি-র কাস্টমার কেয়ার নম্বরে ফোন করলেও লাইন মিলছে না।
আবার সেনা, পুরসভা, বন দফতর মিলে ভেঙে পড়া গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করে দিলেও বিদ্যুৎসংযোগ ফেরাতে দেরি হচ্ছে কেন, তার সদুত্তর সিইএসসি-র কাছে নেই, ধৈর্য হারানো গ্রাহকদের তা বোধের অগম্য। বন দফতর সূত্রের খবর, যোধপুর পার্ক, শোভাবাজার, আলিপুর-সহ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়া গাছ কাটা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ভাঙা গাছ সরাতে দফতরের ১৫০০ কর্মীকে ২৩টি দলে ভাগ করে কাজে নামিয়েছে পূর্ত দফতর।
কাজ করছে এনডিআরএফ-এর ৩৯টি দল।যদিও সিইএসসি-র দাবি, তাঁদের পরিষেবা এলাকায় ৯৫% জায়গায় বিদ্যুৎ চলে এসেছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু জায়গায় লোকবল বাড়িয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। জেনারেটরও দেওয়া হচ্ছে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে। সিইএসসির বক্তব্য, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলিতে গ্রাহকদের ঘরে সাময়িক ভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রাহকদের বড় অংশ অবশ্য তা মানতে চাননি।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.