আত্মনির্ভর ভারত অভিযান: শেষ দিনে প্যাকেজের ব্যাখ্যা দিলেন অর্থমন্ত্রী

0
2

করোনা বিশ্ব মহামারির পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষিত ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের পঞ্চম তথা শেষ পর্যায়ের ঘোষণা হল রবিবার। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের অংশ হিসাবে প্যাকেজ ঘোষণার প্রাক্কালে এদিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, গরিবদের করুণা করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। বরং গরিব কল্যাণ যোজনার মাধ্যমে গরিব মানুষের হাতে অর্থ ও খাদ্য পৌঁছে দেওয়া এবং একইসঙ্গে দেশকে আত্মনির্ভর করা সরকারের কর্তব্য। অর্থমন্ত্রী জানান:

দেশের প্রান্তিক মানুষদের বিনামূল্যে খাদ্যশস্য, রান্নার গ্যাস ও জনধন প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হচ্ছে। জনধন প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন ২৯ কোটি মানুষ। এই খাতে ১০ হাজার ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে ৬.৮১কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস দেওয়া হয়েছে। আট কোটি কৃষকের জন্য যোজনায় বরাদ্দ হয়েছে ১৬ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার ৮৫ শতাংশ অর্থ কেন্দ্র দিচ্ছে। ১০০ দিনের কাজে বাড়তি ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ। এর ফলে ৩০০ কোটি নতুন কর্মদিবস তৈরি হবে। আবাসন শ্রমিকদের জন্য ৩৯৫০ কোটির প্রকল্প ঘোষিত। করোনা মোকাবিলায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্যগুলিকে দেওয়া হচ্ছে ৪ হাজার ১১৩ কোটি। ৫১ লক্ষ পিপিই কিট রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়েছে।

বিপর্যয়ের পরিস্থিতিতে ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে প্রযুক্তির সুবিধাকে সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। স্কুলশিক্ষার জন্য ই-লার্নিং পরিষেবাকে আরও ব্যাপক করা হচ্ছে। স্বয়ংপ্রভার মত আরও ১২ টি অনলাইন চ্যানেল আসছে। ই-পাঠশালায় ৩৪ হাজার বই যুক্ত করা হয়েছে। প্রতি ক্লাসের জন্য নির্দিষ্ট টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে ই-লার্নিং। প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ই-কনটেন্ট। রেডিও পডকাস্ট ব্যবহার অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায়। উচ্চশিক্ষাতেও অনলাইন ব্যবস্থা। ১০০-র বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা। ওয়ান নেশন-ওয়ান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম।

দেশে এখন ৩০০-র বেশি সংস্থা পিপিই তৈরির কাজ করছে। ৫ লক্ষের বেশি মাস্ক তৈরি হচ্ছে। ব্লকে ব্লকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন্দ্র ও প্রতি জেলায় সংক্রামক রোগের হাসপাতাল।

কোভিড পরিস্থিতিতে এমএসএমই-কে বাড়তি ছাড়। ব্যবসায়ীদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এক বছর ঋণ শোধ না করলেও দেউলিয়া প্রক্রিয়া শুরু হবে না। কথায় কথায় আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে না। কর্পোরেট আইনের একাধিক ধারা সংশোধিত হবে। সালিশির মাধ্যমে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে অর্ডিন্যান্স আনছে কেন্দ্র।

কোভিড পরিস্থিতির কারণে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি। স্বাস্থ্যমন্ত্রক দিয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। রাজ্যগুলি টানা তিন সপ্তাহের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ওভারড্রাফট করতে পারবে। রাজ্যগুলিকে ৮৬ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়ায় ছাড় প্রদান। এখন জিডিপির ৩ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ পর্যন্ত ধার নিতে পারবে রাজ্যগুলি। ফলে রাজ্যগুলি অতিরিক্ত ৪.২৮ লক্ষ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলতে পারবে।