মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি, তবে ন্যায় দিতে পারলাম: নির্ভয়ার মা

0
7

সাত বছর তিন মাস ধরে লড়াই করে অবশেষে ন্যায় পেলেন নির্ভয়ার বাবা-মা। শুক্রবার ভোরে তিহার জেলে তাঁরাও উপস্থিত ছিলেন। ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পরে নির্ভয়ার বাবা বলেন, “আজ দেশের জন্য একটা বড়দিন”। বরাবরই স্বল্পভাষী নির্ভয়ার বাবা। কিন্তু এতদিন ধরে সামনে এসে লড়াইটাকে চালিয়ে গিয়েছেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। তাঁর উপরই সংবাদ মাধ্যমের নজর ছিল সবচেয়ে বেশি। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পরে আশাদেবী বলেন, “এতদিনে মেয়ের আত্মার শান্তি পেল। যাকে জন্ম দিয়েছিলাম, তাকে রক্ষা করতে পারলাম না, বাঁচাতে পারলাম না, কিন্তু ন্যায় দিতে পারলাম”। এরপর তিনি বলেন, এবার দেশের মেয়েরা নিরাপদ বোধ করবে। ধর্ষণের করার মতো নিকৃষ্ট কাজ করার আগে লোকে ভাববে, ভয় পাবে। আশাদেবী বলেন, ছেলেদের পরিবারও এবার থেকে বোঝাবে যে এই ধরনের অপরাধ করলে তার পরিণাম মৃত্যুদণ্ড।
এ দিন কথা বলতে গিয়ে বারবার গলা কান্নায় গলা বুজে আসে আশাদেবীর। তবু দৃপ্তকন্ঠে তিনি জানান, তাঁর লড়াই থেমে যাবে না। তাঁর মেয়ের অপরাধীদের তিনি শাস্তি দেওয়াতে পেরেছেন। এবার তাঁর লড়াই হবে ভারতের অন্যান্য মেয়েদের জন্য- যাদের উপর নির্যাতন হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি সবাইকে ভয় না পেয়ে বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ করার কথা বলেন।
আশা দেবী বলেন, ন্যায় ব্যবস্থার প্রতি, ভারতের সংবিধানের প্রতি মানুষের বিশ্বাস অটুট রইল। ফাঁসি যখন বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিল, তখন এই আশাদেবীই বলেছিলেন, “আমার মেয়ের অপরাধীদের যদি ফাঁসি না হয়, তাহলে সংবিধানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া উচিত”। শুক্রবার, প্রাণদণ্ড কার্যকর হওয়ার পরে তিনি বললেন, ভারতের ন্যায় ব্যবস্থার প্রতি আস্থা জাগল। তাঁর কথায়, “মেয়ে বেঁচে থাকলে আজ আমি একজন ডাক্তারের মা হিসেবে পরিচিত হতাম। কিন্তু আজ আমি নির্ভয়ার মতো একজন লড়াকু মেয়ের মা হিসেবে পরিচিত হতে পেরে গর্বিত “।
আশাদেবী জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে নির্ভায়া বলে গিয়েছিলেন “দেখো যেন আমার সঙ্গে যারা এ কাজ করেছে, তারা কেউ ছাড়া না পায়”। আজ মেয়ের অপরাধীদের শাস্তি দিতে পেরে তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছেন বলে জানালেন আশা দেবী। এই দিনটাকে নির্ভয়া দিবস হিসেবে পালন করার আবেদন জানান তিনি।
নির্ভয়া কাণ্ডের আইনজীবী বলেন, “খুশি হতাম যদি মেয়েটি বেঁচে থাকত। তবে জয় হাওয়ায় স্বস্তিবোধ করছি”। তবে এই পরিস্থিতিতে আনন্দ উৎসব পালন করার কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন নির্ভয়ার মা।