কী হবে ভবিষ্যৎ? দিশাহারা হবু চিকিৎসকরা

0
2

চিকিৎসক হওয়ার একরাশ স্বপ্ন নিয়ে বছর তিনেক আগে কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন 150 জন তরুণ। তিন বছর পরে চিকিৎসক হওয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছানো তো দূরের কথা, হতাশায় ডুবে তাঁদের জীবন। কীহবে ভবিষ্যৎ? আদৌ কি মিলবে পূর্ণ ডাক্তারি ডিগ্রি? এখন সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে দুর্গাপুরের গৌরী দেবী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের ছাত্রদের। 2016 সালে এই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপিত হয়। 150 পড়ুয়া নিয়ে শুরু হয় কলেজ। সেই সময় মেডিকেল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অনুমতি ছিল না। নিয়ম অনুসারে পরপর তিন বছর কলেজে পরিদর্শন হয়। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ চালানোর মতো পরিকাঠামো দেখাতে পারেনি গৌরী দেবী মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। যার ফলে মেলেনি কেন্দ্রীয় অনুমোদন।

কিন্তু কেন মিলল না অনুমতি? পড়ুয়াদের কথায়, কোনও পরিকাঠামো নেই কলেজের। না আছেন চিকিৎসক বা শিক্ষক। বেহাল অবস্থা ওপিডিরও। অনুমোদন পেতে 200-র বেশি শয্যা দেখাতে হয়। সেখানে হাসপাতালে 50টি শয্যাও ভর্তি নয়। এমন অনেক বিভাগ রয়েছে যেখানে কোনও চিকিৎসকই নেই। যেসব বিভাগের চিকিৎসক রয়েছেন, তাও পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে। ফলে অনুমতি মিলছে না কলেজের। কিন্তু অননুমোদিত কলেজ থেকে যদি পাশ করেন পড়ুয়ারা, তাহলে চিকিৎসক হিসেবে সারাদেশে তো দূর অস্ত, রাজ্যেও কোনও সরকারি চাকরি পাবেন না। শুধুমাত্র প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন। বহু টাকা খরচ করে যাঁরা এই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন, এখন তাঁরা কোথায় যাবেন? কারণ, পরপর তিনবছর পরিদর্শনের পরে কেন্দ্রীয় অনুমতি না মেলায় রাজ্যের নিয়মানুসারে পড়ুয়াদের অন্যান্য অনুমোদিত মেডিক্যাল কলেজে পড়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা। কিন্তু সেই ব্যবস্থা এখনও হয়নি।

এদিকে, নিজেদের দায়িত্ব থেকে হাত তুলে নিয়েছে গৌরী দেবী মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, পড়ুয়াদের সব রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, অনুমতি দেওয়ার কাজ তাদের নয়। এই পরিস্থিতিতে 2019-এর জুলাই মাসে আদালতের দ্বারস্থ হন এই কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্ররা। কিন্তু সেখান থেকেও এখনও কোনও সুরাহা মেলেনি। মেডিক্যাল কাউন্সিলের অনুমোদন না পাওয়ায় গৌরী দেবী ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল কলেজকে চতুর্থ বর্ষের অনুমতি দেয়নি দিল্লি হাইকোর্ট। এই পরিস্থিতিতে কী হবে ভবিষ্যৎ? মিলবে পূর্ণ ডাক্তারি ডিগ্রি? পাশ করে বেরিয়ে কী করবেন তাঁরা? শুধু তাই নয়, থার্ড ইয়ারে তাঁদের প্রয়োজন প্রাকটিক্যাল ক্লাসের। ফাঁকা ওপিডি-তে সে সুযোগও নেই। এখন সরকারি সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন এই হবু চিকিৎসকরা। তাঁদের এখন একটাই আর্জি, সরকার পাশে এসে দাঁড়াক। তাঁদের অন্যান্য অনুমোদিত মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করার সুযোগ করে দিক। যাতে আগামী দিনে চিকিৎসা শাস্ত্র কেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে তাঁদের সমস্যা না হয়।

আরও পড়ুন-এবার এসবিআইয়ের নয়া শাখা লাদাখে! কত উচ্চতায় জানেন?